জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঢাবিতে আলোচনা সভা

3-9-2016.DUঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের উদ্যোগে ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা আজ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ শনিবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গিবাদবিরোধী এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি প্রধান অতিথি এবং শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে অচিরেই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি জঙ্গি ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গিরা টার্গেট করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিপথগামী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।

Post MIddle

কোন শিক্ষার্থী টানা ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলে অভিভাবকদের কাছে খোঁজ নিতে হবে। পাঠ্যপুস্তকেও জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনতামূলক নিবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইসলামকে শান্তি ও মানবতার ধর্ম অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, মানুষ হত্যা করে কখনও জান্নাতে যাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী ও শান্তিপ্রিয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি তা মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যা করে। এরপর দেশকে উল্টো পথে পরিচালনা করা হয়।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে আবার যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি ও ভাবমূর্র্তিকে ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে তারা জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন জঙ্গিবাদ নির্মূলেও এই বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিবে। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের সৎ, দেশপ্রেমিক ও পূর্ণাঙ্গ ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, কোনভাবেই তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে আপস করবে না। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

বঙ্গবন্ধু বলতেন ‘স্বাধীনতার অর্থ স্ব-অধীনতা’। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিবেক দিয়ে পরিচালিত হতে হবে। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি মানবতাবোধে দীক্ষিত হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

পছন্দের আরো পোস্ট