সংগীত শিল্পী পরিচয়টা হারাতে চান না প্রীতি কণা

IMG_20160830_221749_519আন্তঃবিভাগ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় হয়েছে প্রথম। মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিভাগে হয়েছিল চতুর্থ। বর্তমানে সুযোগ আসছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার। স্বপ্ন এখন আরো এগিয়ে যাওয়ার। বাবা পেশায় একজন সংগীত শিক্ষক বাবার কাছে সংগীত জীবনের হাতে খড়ি বাবা যখন গানের রেওয়াজ করতেন তখন থেকে চুপিচুপি শুনে মনেমনে গাইতেন। এর পরে পরিবারের  ইচ্ছেতে তালিম নিতে শুরু করেন বাবার কাছে। তবে শৈশব জীবনে কোথাও বড় কোন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেনি।এর মধ্যে চলে গেছে অনেক বছর কিন্তু গানের মায়া ছাড়তে পারেনি তাকে।

কথা বলছিলাম প্রীতি কণা সূত্রধর এর সাথে বাড়ি নাটোর শহরের দক্ষিণ বড়গাছা পালপাড়া। বাবা শ্রীদাম কুমার সুত্রধর ও মা পারুল সুত্রধরের একমাত্র কন্যা প্রীতি। ইচ্ছে ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিভাগে পড়া। সুযোগও মিলেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে কিন্তু ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।

তবে তার ইচ্ছে শক্তিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কেউ। শিখেছেন আধুনিক, উচ্চাঙ্গ সংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি। এরমধ্যে আন্তঃবিভাগ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নজরুলগীতিতে প্রথম ও আধুনিকে পেয়েছে  দ্বিতীয় পুরষ্কার। এছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে পাচ্ছেন আমন্ত্রণ।প্রীতি বর্তমানে পড়াশুনা করছে নাটোর নবাব সিরাজ (এনএস) উদ্-দৌলা সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষে।

প্রীতি বলেন, ছোটবেলায় সবাই কমবেশি নাচ-গান করে। পরে সেটা ধরে রাখতে পারে না। কিন্তু গানটা আমার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে গেছে। মানুষের জীবনে মৌলিক চাহিদা পাঁচ’টি কিন্তু আমার ছয়’টি আর সেটি হল গান। আমি এখন গান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারিনা।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যখন ভর্তি হতে পারলাম না তখন ঠিক করেছিলাম, আর যা-ই করি, গান ছাড়ব না। তবে এ জন্য মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি।শিক্ষা জীবন শেষে চাকরিতে ঢোকার ইচ্ছে থাকলেও ‘সংগীত শিল্পী’ পরিচয়টা হারাতে চান না কখনো।

কলেজে ভর্তির পর কলেজের যেকোনো অনুষ্ঠান যেমন,বিজয় দিবস, নবীনবরণ, পহেলা বৈশাখসহ সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই মঞ্চে প্রীতিকে দেখা গেছে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তার সুমধুর গান দিয়ে কলেজের সবার প্রিয় মুখ হয়ে উঠেছেন।

Post MIddle

তিনি আরো বলেন, কলেজে আন্তঃ বিভাগ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কিন্তু সেখানে নাম দিতে ভয় পাচ্ছে কলেজ মিলনায়তনে হল ভর্তি দর্শকের সামনে গাইতে হবে যদি না পারি। এমনি নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায় কিন্তু তার বান্ধবী লিজা কোন কথা না শুনে তার নাম লিখিয়ে দিয়েছিল। তবুও মন মানছে না। সে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে নজরুলগীতিতে পেয়েছি প্রথম পুরষ্কার।

মেয়ে হিসেবে তাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারেনি। সংগীতের প্রতি ভালবাসা থেকে প্রতি সপ্তাহে একদিন নাটোর থেকে রাজশাহীতে যান সংগীত চর্চা করতে। বর্তমানে সংগীত চর্চা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শলক হোসেনের কাছে।পাশাপাশি সংগীতকে অনুধাবন করার জন্য শিখেছেন তবলা, হারমোনিয়াম বর্তমানে শিখছে বেহালা।

12472336_1677772662471987_5811556495532975566_n

আর সে কারণে কলেজে ক্লাস ছাড়া বাকি সময়ের বেশির ভাগই সংগীতের রেওয়াজে ব্যস্ত থাকেন। তাই বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা দেওয়া হয় না। নিজে এখনো শিক্ষার্থী হলেও এর মধ্যেই গানের শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেছেন প্রীতি। তার বাড়ির পাশে কয়েক জন ছাত্রীকে তিনি গান শেখান।ইচ্ছা জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গান প্রিয় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্য সংগীত শিক্ষা দেবেন।

কষ্ট তো করছি গানের জন্য। আমার স্বপ্নের পুরোটা জুড়েই গান। অবিরাম সেই স্বপ্নের পথেই ছুটে চলছি।

জু

পছন্দের আরো পোস্ট