ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট কালেকটিভ (আরডিসি)-এর যৌথ উদ্যোগে “Secularism, Democracy and Gender Parity in South Asia” শীর্ষক দু’দিন ব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন রবিবার (২৮ আগস্ট) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শুরু হয়েছে। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। ভারতের মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ ও ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, ভারতের জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রেজওয়ান কায়সার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল স্বাগত বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো: এনামউজ্জামান ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মানুষের সমঅধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। তাঁর রাজনীতির মূলমন্ত্র ছিল গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ এবং সমাজতন্ত্র। তিনি বলতেন ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র বিমোচন, মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যা্েচ্ছ। তৃণমূল নারীদের এগিয়ে নিতে সরকার ইতোমধ্যেই নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। স্পিকার বলেন, দক্ষিণ এশিয়া তথা বৈশ্বিক পরিম-লে গণতন্ত্রের বিভিন্ন ক্রিটিকাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

Post MIddle

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সমতা, উদারতা, নারীর সমঅধিকার, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি, দারিদ্র বিমোচন এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সাধন। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, সমৃদ্ধি, প্রগতি, স্থিতিশীলতা এবং আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের সকল ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, নারীরা অনেক এগিয়েছেন। তারপরও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা থেমে নেই। একমাত্র শিক্ষাই সহিংসতা থেকে মুক্ত করে নারীর ক্ষতায়ন নিশ্চিত করতে পারে। তিনি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে প্রদত্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ উদ্ধৃত করে বলেন, মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি অত্যন্ত জরুরী। শান্তিপূর্ণ পরিবেশই আমাদের স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে সক্ষম করে তুলবে। দারিদ্র, ক্ষুধা, রোগ, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও আমরা সক্ষম হবো। ধর্মনিরপেক্ষ ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে উদার ও নিঃস্বার্থ হয়ে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা অপরিহার্য। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

 দু’দিন ব্যাপী সম্মেলনে বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষাবিদগণ অংশগ্রহণ করছেন। ##

পছন্দের আরো পোস্ট