
বিশ্বায়নের যুগে বিবিএর চাহিদা বাড়বেই । নাঈম জালাল
বর্তমান শিক্ষাব্যাবস্থায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান,বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশন ডিগ্রীর গুরুত্ব, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রাতিষ্টানিক লক্ষ্য, অবস্থানসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে লেখাপড়া২৪.কমের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সিদ্ধেশরী ক্যাম্পাসের বিবিএ বিভাগের কো-অর্ডিনেটর, এসোসিয়েট প্রফেসর নাঈম জালাল উদ্দিন আহমেদ।
স্বাগতম স্যার
আপনাকেও স্বাগতম
বিশ্বায়নের যুগে ‘বিবিএ” ডিগ্রীর চাহিদার বৃদ্ধিকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করছেন?
বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশন একটি এডুকেশন, যেটা ভবিষ্যতেও বাড়বে, অতীতেও ছিলো,বর্তমানেও আছে। দেখেন,চাইনিজ-আরব রাও ব্যাবসায় করে গেছে। বর্তমান বিশ্বায়নের জন্যই ‘ Free flow of goods & services and information’। গ্লোবাল ভিলেজ এর কথা কুঁড়েঘরের মত এখানে, ইন্টারনেট-অনলাইন সর্বত্র ব্যাবসায় আধুনিক হচ্ছে। এ্যামাজন.কম সহ অনলাইন ব্যাবসায়ের এই যুগে ব্যাবসায় বাড়তেই থাকে। মোটকথা বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে ‘বিবিএ’ ডিগ্রীর চাহিদা বাড়বেই।
দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথমসারিতে আছে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি।কি কারণে এইচএসসি পাশ করা একজন শিক্ষার্থী স্টামফোর্ডের ‘বিবিএ’ বিভাগে ভর্তি হবে?
দেখেন প্রত্যেকটি মানুষের এক একটা Expertise থাকে, জন্মগত ভাবেই এটা হয়ে থাকে এবং অবশ্যই এটার প্রতি ইন্ট্রোভার্ট থাকতে হয়।একজন শিক্ষার্থী যদি মনে করে আমি বিজনেস এক্সিকিউটিভ হবো, উদ্যোক্তা হবো সহ বিজনেস রিলেটেড বিষয়ে পড়তে চায়, এখন এদেশে অনেক ইউনিভার্সিটি আছে। এখন আমরা জানি ইউজিসির ‘এ’ গ্রেডের ইউনিভার্সিটির মধ্যে আমরা আছি, এবং আমরা সবসময়ই এক থেকে দশের মধ্যে থাকি।
একজন শিক্ষার্থী তিন চারটা প্রধান কারণে বেছে নিতে পারে আমাদের, প্রথমত কস্ট এফেক্টিভনেস। আমি যতটুকু জানি আমাদের সমমানের অনেক ইউনিভার্সিটির থেকে আমাদের কস্ট তিনভাগের একভাগ। এরমানে হলো এখানে যারা টাস্ট্রি বোর্ডে আছেন তারা এটিকে ব্যাবসার জন্য পরিচালনা করেন না,বরং সবাই যাতে পড়তে পারে সেই সুযোগ করে দেয়া।
দ্বিতীয়ত, ফ্যাকাল্টি মেম্বারস। সবাই অনেক বড় বড় বিদ্যাপিঠ থেকে এসেছে, সবাই যোগ্যতাসম্পন্ন। এছাড়া আমাদের নিজেদের ফ্যাকাল্টিও আছে, আমরা যদি আমাদের স্টুডেন্টদের না নেই, অন্যরা কেন নেবে? যারা স্টুডেন্টদের ভেতর থেকে টিচার হয়েছে কারোরই সিজিপিএ ৪ এর নিচে নেই, সবারই চারটা প্রথমবিভাগ রয়েছে।
তৃতীয়ত, আমাদের চমৎকার ক্যাম্পাস, গোছানো লাইব্রেরী ও কম্পিউটার ল্যাব। চিন্তা যদি করেন সিদ্ধেশরী ক্যাম্পাসের কথা, এরকম ক্যাম্পাস ঢাকার কোথাও পাবেন না। পুরো ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।সবমিলিয়ে আমার মনে হয় স্টামফোর্ড একটি ভালো চয়েজ শিক্ষার্থীদের জন্য।
‘মানসম্মত শিক্ষাদান বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিচ্ছে’ একথাটি উঠে আসছে সমসাময়িক বিভিন্ন আলোচনায়।স্যার, আপনি দায়িত্ব নেবার পরে নেওয়া কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু যদি বলতেন
আমি দায়িত্ব নিয়েছি খুব বেশিদিন হয়নি। একবছর হলো, আগের বছর ফেব্রয়ারীতে আমি দায়িত্ব নেই আনুষ্টানিকভাবে।আমি আমার ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব নেবার পরে যে জিনিসগুলো করেছি সেটা যদি বলতে হয়, একজনের পক্ষে তো কোনকিছু করা সম্ভব নয়। সকলের সহযোগীতায় এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আসলে সর্বোচ্চ দেয়ার কোন শেষ নেই বলে আমি মনে করি, কারণ স্টুডেন্টরা অনেক বেশী আশা করে আমার থেকে।
আমি সপ্তাহের সাতদিনও থাকি, কারণ আমি আমার স্টুডেন্টদের ভালবাসি। আমার মতে, টিচিং কোন ডে টু ডে প্রফেশন নয়।এটা সমাজের প্রতি দায়বোধ্যতার জন্য করা। শুধুমাত্র কমিটমেন্টের জন্য অনেকে অনেকদূর যেতে পেরেছে। আমি আশার পরে কিছু জিনিস চেস্টা করেছি করার।আমাদের তিনটি ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন আটকে ছিলো নানা কারণে, বর্ণাঢ্য আয়োজনে করেছি সেটা। বিভাগের ইতিহাসে কখনোই সব সিআরদের নিয়ে মিটিং হয়নি। আমি সেটা করেছি,
সকল ব্যাচের সিআর দের নিয়ে নিয়মিত মিটিংয়ের আয়োজন করেছি। অনেক সমস্যা টিচারদের থেকে নাও আসতে পারে, তাই সরাসরি স্টুডেন্ট প্রতিনিধিদের মুখ থেকে শুনেছি। আমার সহকর্মী সম্মানীত ফ্যাকাল্টিদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করি। আমি গর্বিত এত বড় একটা ডিপার্টমেন্টকে কো-অর্ডিনেট করতে পেরে।আসলে ভালোর কোন সীমা নেই, সর্বোচ্চটা দেবার চেস্টা করছি।
স্যার, স্টামফোর্ডে এখনো বিজনেস ক্লাব প্রতিষ্টিত হয়নি। এটি কবে নাগাদ দেখা যেতে পারে?
গতবছর থেকে আমরা বিজনেস ক্লাবের কথা চিন্তা করছি, এতবড় একটা ইউনিভার্সিটি, সবার মতামত নিয়ে শীঘ্রই করার চিন্তা আছে আমাদের। এটার জন্য আহসান কবীর রুবেল স্যার বিশেষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন, কতৃপক্ষের সাথে ও কথা বলে সবুজসংকেত পেয়েছি।
স্টামফোর্ড বিবিএর শিক্ষার্থীরা নানাজায়গায় সুনাম অর্জন করে আনছেন, এব্যাপারে ডিপার্টমেন্ট কি ধরণের সহযোগীতা করে থাকে?
বিবিএ তে স্মার্ট ছেলেরা পড়ে। অবশ্যই আমার সবধরণের উৎসাহ তাদের পাশে থাকে। আমি গর্বিত আমার স্টুডেন্টদের অর্জনগুলো নিয়ে।
স্টামফোর্ড বিবিএ ফ্যাকাল্টির কোন আধুনিকায়ন, সংযোজনের চিন্তাভাবনা আছে কিনা?
অবশ্যই। এটা তো একটা প্রক্রিয়া, আরো সুযোগবাড়ানো।টেকনোলজি বৃদ্ধি করা, এছাড়া উন্নতমানের ল্যাব তৈরী করা। সর্বোপরি বিজনেসের শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো সুযোগসুবিধার ব্যাবস্থা করা আমার লক্ষ্য।
সভা-সেমিনার নিয়মিত করার কোন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছেন কিনা
আসলে এটা একটু অন্যভাবে হচ্ছে, ওরিয়েন্টেশনগুলোতে আমরা বিভিন্ন ফার্মের হেডদের এনে থাকি গেস্ট হিসেবে।নিয়মিত করার পরিকল্পনা তো আছেই,গতবছর জুন-জুলাই তে আমেরিকান প্রফেসর টমাস গারসাম্বকি, তিনি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিংয়ের উপর সেমিনার করেছিলেন। আমরা সেখানে মেজরের ব্যাচগুলোকে পাঠিয়েছিলাম, তিনি ক্লাসও নিয়েছেন তাদের। সর্বশেষ দুইমাস আগেও কনসার্ণ গ্রুপ থেকেও এমন একটি সেমিনার করে গেছে স্টামফোর্ড, সেটাও বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের আয়োজনেই হয়েছে।
বিবিএ ডিপার্টমেন্ট ক্রমেই গুছিয়ে উঠছে।এটার পেছনের রহস্য কি?
আমি কাজে বিশ্বাসী মানুষ। মূল্যায়নের ভার সবার। যেকাজগুলো বাকি ছিলো তা সমাপ্ত করা আর বিবিএর শিক্ষার্থীদের ভালো কিছু দেয়াই আমার লক্ষ্য।
স্যার, আপনার মূল্যবান সময় দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।আমি নিয়মিত লেখাপড়া২৪.কম অনলাইন পড়ে থাকি, শুভকামনা থাকলো।