বিশ্ব স্বাক্ষরতা সংস্থার এম্বাস্যাডর বাংলাদেশি তরুণ

বাংলাদেশের জন্যে আরেকটি গর্বের ব্যাপার যে বিশ্ব সাক্ষরতা ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০১৬ জন্য তার এমবাস্যাডর (দূত) হিসেবে একজন বাংলাদেশী তরুণ নেতা নির্বাচিত হয়েছে। তার স্বল্প জীবনে, এ স্বপ্নদর্শী তরুণ নেতার সমাজের উন্নয়নে অনেক অবদান রয়েছে। স্কুল জীবন থেকে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তবে তার মূল লক্ষ্য শিক্ষা ব্যবস্থার দুরগতি রোধে কিছু করবেন।

“বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন শুধুমাত্র সার্টিফিকেট লাভে। তারা তাদের পাঠ্যক্রমে আটকে আছে এবং কেবল ভাল চাকুরী লাভটাই হচ্ছে শিক্ষার প্রধান উদ্দ্যেশ্য। অংশগ্রহণহীন এবং একঘেয়েমিপূর্ন শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আগ্রহ হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল লাভে তারা অন্যায় পথ বেছে নিতে প্রস্তুত। নাগরিক হিসেবে তার নৈতিক ও দায়িত্বশীল জীবন যাপনের কোন নির্দেশিকা নেই এ শিক্ষা ব্যবস্থায়। গ্রাম ও শহরে বৈষম্যতো থেকেই যাচ্ছে। তাই শিক্ষা পদ্ধতির পুনর্বিবেচনা করতে হবে বলে আমি মনে করি। ” এ ভাবেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে প্রশ্নতুলেছেন এ তরুন নেতা।

তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস স্টাডিজের ছাত্র, এখানে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন তিনি।

বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন. তার এস এস সি সম্পন্ন মোগরাপাড়া এইচ জি জি এস স্মৃতি বিদ্যায়তন থেকে এবং এইচ এস সি পাশ করেন মাইলস্টোন কলেজ থেকে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। মোঃ রিয়াজুল করিম স্বপ্নবাজ এবং আশাবাদি একজন তরুন প্রতিভাবান নেতৃত্বের নাম। যার উদ্দ্যোগ এবং কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে একাধিক সামাজিক সংগঠন। এ সকল কাজে তার প্রেরনার জায়গাটা অন্যরকম, তিনি বলেন, “সমাজ আমাকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে যে অবদান রেখেছে, তার প্রতিদান হিসেবেই এ সকল সামাজিক কাজে অশংগ্রহন করেছি। তবে আমার বড় ভাই, আম্মু এবং আব্বুর অবদান আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি।”

২০০৯ সাল তখন কলেজে পড়া একজন ছাত্র, তিনি তার কাছের কিছু বড় ভাই, যারা সকলেই তখন ছাত্র, তারা ভাবছিলেন তাদের নিজ এলাকার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা লাভের সু্যোগ করে দেয়া প্রয়োজন। তাই নিজ এলাকায় গড়ে তোলেন একটি আধুনিক বিদ্যালয়। দরিদ্র গ্রামীণ ছাত্রদের কে আধুনিক কম্পিউটারাইজড বিদ্যালয় উপহার দিতে দিনরাত খেটেছেন তার। চাইল্ড হ্যাভেন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এখন একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রথমে, তারা শুধুমাত্র ৭৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করেন। এখন এটা অধিক ২৯০ শিক্ষার্থী পড়ছে এ বিদ্যালয়ে। যদিও পড়াশোনার খাতিরে এলাকাতে খুব কম যাওয়া হয় তার। তবে এলাকায় থাকাকালীন সিংহভাগ সময় কাটে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে।

২০১৩ সালে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৬ ডিসেম্বরের “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংস্কৃতি” নামে একটি জাতীয় অনুষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন এ সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার প্রথম দিকে, ম্যানেজমেন্ট উইক নামে এক জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের যাত্রা কালীন মানুষদের একজন হিসেবে কাজ করেছেন।

Post MIddle

২০১৫ সালে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মডেল ইউনাইটেড নেশনস প্রতিষ্ঠা করা. তিনি বলেন, “আমি মনে করি এটা চিন্তা, সমঝোতা ও নীতিনির্ধারণে কাজের প্রশিক্ষনশালা। ছাত্র-ছাত্রীরা এতে যুক্ত হলে ‘জ্ঞান বিকশিত হবে এবং অন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিতি ঘটবে বলে আশা রাখি।”

তিনি জেমান-২০১৫ সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন. আগস্ট ২৯,২০১৫ হতে আগস্ট ২৭ অনুষ্ঠিত হয়।

২০১৫ সালের শেষের দিকে, ট্যাক্সের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য, ট্যাক্স জাস্টিস ক্যাম্পেইন বাংলাদেশ নামে একটি দলে কাজ শুরু করেন। তিনি নিজে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রচারণা ও কর্মশালা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন. বর্তমানে তিনি ট্যাক্স জাস্টিস ক্যাম্পেইন বাংলাদেশ এর অন্যতম সমন্বয়কারীর ভুমিকা পালন করছেন। তিনি বলেন, “আমরা শতভাগ কর্পোরেট ট্যাক্স নিশ্চিত এবং দরিদ্রের উপর ভ্যাট কমাতে চাই। “

বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড ন্যাশন ইয়ুথ এন্ড স্টুডেন্ট এসোশিয়েশনের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি, গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আছেন।

তাছাড়া তিনি জেনারেশন জাতিসংঘের সক্রিয় সদস্য এবং গত বছর সি. আই. ভি. আই. সি. ইউ. এস. (নাগরিকদের অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ব জোট) একজন যুব নেতা হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেয়।

তিনি মানসম্পন্ন শিক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য. তিনি বলেন, “প্রথমেই শিক্ষার্থীদের মানসিক ভাবে বেধে ফেলা যাবে না তাদেরকে মুক্ত করে দিতে হবে। নিজেদের মত করে শিখতে দিতে হবে। ছাত্রদের পড়ানোর আগে অবশ্যই একজন শিক্ষকের প্রস্তুত হতে হবে। তাকে প্রশিক্ষন নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের মানসিকতা, সমাজ বাস্তবতার ও পরিবেশের সাথে শিক্ষার মিল থাকতে হবে।“

সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং তরুনদের শক্তিকে একিভূত করতে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এ. বি. সি. ডি. ওয়ার্ল্ড। কিন্তু সামগ্রিক ব্যস্ততার কারনে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি তিনি। তবে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এ তরুন নেতা স্বপ্ন দেখেন সুন্দর বাংলাদেশের। স্বপ্ন দেখেন উন্নত বাংলাদেশের। তরুণদের আদর্শ ও জাতীয় অহংকার, এ প্রজন্মের তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “ভাবতে শিখুন, সমাজকে নিয়ে ভাবুন এবং একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে কাজে নেমে পড়ুন, কাজ করুন ফলাফল আসবেই। তবে কাজে নামার আগে আরেকবার ভাবুন ” #

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট