ছাত্র ধর্মঘটে অচল জবি

Masum jnu picপুরাতন ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কে হস্তান্তর ও জাতীয় চার নেতার নামে আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই হলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ধর্মঘট শুরু করে।

Post MIddle

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক ধর্মঘটের কারণে কেউ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। কোনো ক্লাস-পরীক্ষা ও অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে সদরঘাট-গুলিস্তান রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে সৃষ্টি হয় যানজটের।এদিকে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, হলের জন্য আমরা এর আগেও রক্ত দিয়েছি, প্রয়োজন হলে নিজেদের প্রাণও দিবো, তবু আমাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হোক।আন্দোলনকারীরা আরও জানান, আবাসিক হল তাদের অধিকার, এই অধিকার থেকে বঞ্চিত তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে যতবার এই দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘আশ্বাস’ দিয়ে তা ঠেকিয়েছে। কিন্তু তাদের আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। এবারও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

আন্দোলনরত হেলাল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ১১ বছরেও একজন শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা শহরে ব্যাচেলর বাসা ভাড়া পাওয়াসহ নানা হয়রানির শিকার তারা। এসব সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো আবাসনের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীদের কষ্টের বিষয়গুলো যদি ভালোভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপস্থাপন করে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আবাসন সমস্যার সমাধান হবে বলে বিশ্বাস করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন শেষে দুপুরে শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মলনে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন এবং দাবি না মানলে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন ।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আগামী রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করা হবে এবং দাবি না মানলে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল করা হবে। তবে ২১ আগস্টের শহীদদের সম্মানে রোববারের কর্মসূচি কিছুটা শিথিল থাকবে।আমরা হলের জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছি, যতদিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস না দিবেন ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখব।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম জরুরি একাডেমিক সভায় কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ীভাবে দিতে একাডেমিক কাউন্সিল সরকারের নিকট আবেদন জানান। একই সঙ্গে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের জমি পাওয়ার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আবেদন করে।

পছন্দের আরো পোস্ট