জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাবিতে আলোচনা সভা

Pic. August-17জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আজ (১৭ আগস্ট ২০১৬) বুধবার আইবিএ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি প্রধান অতিথি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল মজিদ। আলোচনায় অংশ নেন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অধ্যাপক ড. এম জিয়াউল হক মামুন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহকারী অধ্যাপক মো: রেজাউল কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সহকারী অধ্যাপক মো: ইফতেখারুল আমিন।

সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও মহামানব হয়েছিলেন। শুধু মানুষের প্রতি ভালবাসা ও মমত্ববোধ তাঁকে মহামানবে পরিণত করেছিল। এই ভালবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে তাঁকে অনেক ত্যাগ স্বীকার এবং সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণই ছিল মুক্তিযুদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশ। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে বর্ণনা করে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, এখানে অন্য কোন ব্যক্তির নাম উচ্চারিত হওয়ার সুযোগ নেই। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের রাজনীতিতে তিনি গুণগত পরিবর্তন এনেছিলেন। সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষাকে তিনি ধারণ করেছিলেন।

Post MIddle

সাধারণ মানুষকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করে তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বর্তমানে দেশে ও বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। গুলশানে জঙ্গি হামলা এই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, আইএস নামধারী জঙ্গিরা মুসলিম বিশ্বসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তে সন্ত্রাসী হামলা চালালেও ইসলামের প্রধান শত্রু ইসরাইলে কেন হামলা হচ্ছেনা ? অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন বাংলাদেশ গড়তে তিনি শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে পুর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিশুদের মাঝে সংস্কৃতি চর্চা বাড়াতে হবে। শুধু জিপিএ ৫-এর পেছনে না ছোটার জন্য তিনি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেছিলেন। উপাচার্য বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলেন, তিনি অত্যন্ত সৎ, উদার, দেশপ্রেমিক, সাহসী, সময়নিষ্ঠ ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয় করে গেছেন। একারণে সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বাস করেছিল এবং তাঁর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।এর আগে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট