তথ্য সেবায় রাবির হায়ার স্টাডি ক্লাব

বর্তমান সময়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। বিশেষত স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশের কোনো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার ক্ষেত্রে। তো সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের স্বচ্ছভাবে ধারণা থাকতে হয় এর পথ পরিক্রমা সম্পর্কে। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে পক্রিয়া কী, কোন দেশে কী সুযোগ-সুবিধা, অসুবিধাগুলো কী, এসকল বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের।

Post MIddle

এক্ষেত্রে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ‘হায়ার স্টাডি’ সম্পর্কিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পালন করে থাকে মুখ্য ভূমিকা। যারা বিভিন্ন সভা-সেমিনার, কর্মশালা আয়োজন ও পরামর্শ দান করে আগ্রহীদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন।

তেমনই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রাজশাহী ইউনিভার্সিটি হায়ার স্টাডি ক্লাব’। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ক্লাবটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর । রাবির হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সালেহ রোকনের নেতৃত্বে এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই কয়েকজন উদ্যমী স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীরা ক্লাবটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। তবে তাদের এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বিভিন্ন দেশের হায়ার স্টাডি সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা এবং ‘মুক’ নিয়ে কাজ করা। যেখান থেকে হায়ার স্টাডি সম্পর্কিত যেকোন তথ্যসেবা পেয়ে উপকৃত হবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ক্লাবটির যাত্রাকাল থেকে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। রাবির কিংবা বিদেশের বিভিন্ন ‘রিসোর্চদেরকে’ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আয়োজন করেছে সভা-সেমিনার কিংবা কর্মশালা। এর মাধ্যমে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সকল তথ্যের অভাব পূরণ করে আসছে ক্লাবটি। বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ধারণা, স্কলারশিপ সুযোগ-সুবিধা, ‘মোটিভেশন লেটার’, ভিসা প্রসেসিং এছাড়াও বিভিন্ন ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’ যেমন- সুসি, নেসা, সিসিআই, ইউ গ্রেড এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামসহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করে থাকে রাবির এ হায়ার স্টাডি ক্লাবটি। তবে স্বপ্ন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা। যারা নেতৃত্ব দেবে বিশ্বে, এগিয়ে নেবে বাংলাদেশকে।

সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি রসায়ন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাজ্জাদ হোসেন। তিনি জানান, বিদেশে গিয়ে হায়ার স্টাডি করার সুবিধাগুলো কী তা আমরা অনেকেই ভালোভাবে জানি না অথবা এ সম্পর্কে আগ্রহী কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে অগ্রসর হতে পারছি না। আর এই প্রেরণামূলক এবং তথ্যের অভাব পূরণে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। এক্ষেত্রে আমরা আয়োজন করে থাকি বিভিন্ন সেমিনার ও ওয়ার্কশপ; যেখানে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন রাবির বিভিন্ন প্রাক্তন ছাত্ররা যারা হায়ার স্টাডি করে দেশে ফিরেছেন বা হায়ার স্টাডি করতে যাচ্ছেন। এছাড়া আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ‘রিসোর্চদের’ আমন্ত্রণ করে থাকি আমাদের সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

সাজ্জাদ আরো জানান, আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজশাহীর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও ছাত্র এবং প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে কাজ করে থাকি। এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের ‘আন্ডার গ্র্যাজুয়েটদের’ নিয়েও আমরা কাজ শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্যই দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয় ও উন্নত দেশে পরিণত করা।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে নানা সীমাবদ্ধতায় চলতে হয় ক্লাবটির। নিজস্ব কার্যালয় না থাকায় প্রতি বুধবার সাপ্তাহিক মিটিং হয় রাবির কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায়। সেমিনারগুলো আয়োজন করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন করফারেন্স রুমগুলোতে। ক্লাবটিতে ১২০ জন সদস্যদের মধ্যে মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেক। ক্লাবটির উপদেষ্টা হয়ে ছায়ার মতো সহযোগিতা করে যাচ্ছেন প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোহেল হাসান, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. অসিউজ্জমান, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার।

তবে বর্তমান সময়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীরা যেভাবে ছুটছে, সেরকম তাদের সঠিক ও কার্যকরী তথ্যও প্রয়োজন। আর এ লক্ষ্যেই হায়ার স্টাডি সম্পর্কিত দেশের বিভিন্ন সংগঠনগুলো কাজ করে যাচ্ছে। আর সে অগ্রযাত্রাকে আরো ত্বরান্বিত করতে বিশেষত রাবির শিক্ষার্থীদের এ সংক্রান্ত তথ্যের অভাব পূরণ করতে ক্লাবটি সহায়ক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে জানান রাবির হায়ার স্টাডি ক্লাবের সভাপতি।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট