যাঁদের জন্য গর্ব করতে পারে বাংলাদেশ

গুলশান হামলার পর বাংলাদেশের ধনী ও মধ্যবিত্ত তরুণদের সম্পর্কে কেবল নেতিবাচক কথাই বলা হচ্ছে৷ কিন্তু এ দেশে এমন অসংখ্য তরুণ আছে, যাঁদের জন্য গর্বে বুক ফুলে যায় বাংলাদেশের৷ গুরুত্ব বিবেচনায় লেখাপড়া২৪.কমের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তাঁদের কয়েকজনের গল্প তুলে ধরবো আমরা।

 

করভী রাকসান্দ এবং ‘জাগো ফাউন্ডেশন’

জন্ম এক বিত্তবান পরিবারে৷ অথচ সেই পরিবারের সন্তান হয়েও ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় বস্তিতে দরিদ্র শিশুদের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘জাগো ফাউন্ডেশন‘৷ করভী সেই ‘জাগো’-র গল্প শুনিয়েছেন ডয়চে ভেলেকে৷

Bangladesch Erfolgreiche Jugendliche‘জাগো ফাউন্ডেশন’ বাংলাদেশে একটি সুপরিচিত নাম

বয়স তখন মাত্র ২১ বছর৷ একদিন ঢাকা শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর সময় একদল পথ শিশুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়৷ এই শিশুরা রাস্তায় পড়ে থাকা বোতল সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করত৷ সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফেরার সময় হলো একটি ছয় বছরের মেয়ে করভীর হাত ধরে তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে বলে যে, তার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই৷ অনুরোধ জানায় বাড়িতে নিয়ে যেতে৷ ছোট্ট মেয়েটির এই অনুরোধ করভীকে অসহায় করে তোলে৷ সেদিন মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেনিকরভী৷ কিন্তু সেই দুঃসহ যন্ত্রণা তাঁকে শিশুদের জন্য কিছু করার উৎসাহ জুগিয়েছিল৷ বাংলাদেশে যখন কল সেন্টার গড়ে উঠতে শুরু করলো তখন করভী ঠিক করল, ইংরেজি শেখানো গেলে দেশে-বিদেশে এ সব শিশুদের কাজের সুযোগ তৈরি হতে পারে৷ যেই ভাবা, সেই কাজ৷ রায়ের বাজার বস্তিতে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ১৭ জন শিশুকে নিয়ে শুরু হলো ক্লাস৷ আর গড়ে উঠল জাগো ফাউন্ডেশন৷

Post MIddle

নামকরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল স্কলাস্টিকায় পড়া করভীর সামনে দু’টো পথ খোলা রেখেছিলেন বাবা-মা৷ একটি পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব বুঝে নেয়া, নয়ত নিজের পথে হাঁটা৷ করভী দ্বিতীয়টিই বেছে নিয়েছিলেন৷

Bangladesch Erfolgreiche Jugendliche‘জাগো ফাউন্ডেশন’এর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করভী

বর্তমানে ‘জাগো ফাউন্ডেশন’ বাংলাদেশে একটি সুপরিচিত নাম৷ ফাউন্ডেশনটি কেবল দরিদ্রদের ইংরেজি শিক্ষাই দিচ্ছে না, সুস্বাস্থ্য, প্রাথমিক চিকিৎসা, সেলাই ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানও পরিচালনা করছে৷ আজকের অবস্থায় পৌঁছাতে এর সময় লেগেছে মাত্র চার বছর৷ দারুণ একটি দল আর স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় জাগো আজ অনেক কাজ করছে৷ ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত হন করভী৷ সে বছরই ইংল্যান্ডের মোসাইক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷ ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অনূর্ধ্ব ৩৩ শীর্ষ ৯৯ প্রভাবশালী পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক নেতার পুরস্কার পান করভী৷ একই বছর কমনওয়েলথ ইয়ুথ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন৷ এছাড়াও আরো নানা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি৷

Bangladesch Erfolgreiche Jugendlicheসুস্বাস্থ্য, প্রাথমিক চিকিৎসা, সেলাই ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানও পরিচালনা করছে ‘জাগো’

 

ডয়েচেভেল থেকে সংগৃহীত

 

পছন্দের আরো পোস্ট