ঢাবির নতুন বিভাগ’যোগাযোগ বৈকল্য’র উদ্বোধন

picture-3ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নব-প্রতিষ্ঠিত যোগাযোগ বৈকল্য (কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস) বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ (২৭ জুলাই) বুধবার সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে বিশিষ্ট শিশু মনস্তত্ত্ববিদ ও অটিজম বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই বিভাগের উদ্বোধন করেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যোগাযোগ বৈকল্য বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা না হলে মানুষের মাঝে, সমাজের মাঝে উন্নতি সৃষ্টি করা যাবে না। যোগাযোগের উন্নতি না হলে সমাজ এগিয়ে যাবে না, দেশ এগিয়ে যাবে না। ব্যক্তি মানুষের এই সমস্যা পরিবার সমাজকে প্রভাবিত করে তাই এই বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম।

 

এই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেমন- তোতলানো বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা নয়, মানুষের ভুল বোঝার জন্যে এ ধরনের ধারণা হয়; যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারেন। সমাজের মানবিক ও মানসিক অগ্রগতির সূচনার জন্য এই বিভাগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যোগাযোগের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করে। তাই উন্নত সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন বিভাগের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক পূর্ব নির্ধারিত ও তার অভিপ্রায় অনুযায়ী এই বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শত ব্যস্ততার মধ্যেও উপস্থিত থাকার জন্য প্রধান অতিথিকে ধন্যবাদ জানান। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, আজ এক ঐতিহাসিক স্থানে আমরা এই অনুষ্ঠান করছি যে স্থান থেকে জাতির জনক স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। এই ভবন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই ভবনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সেসময়ে বৃটিশ সংবাদপত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট-এর সাথে এই ভবনের তুলনা করা হতো। এই ভবনে ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। বঙ্গবন্ধু ভবনে আসা তাই এক সৌভাগ্যের ব্যাপার। উপাচার্য বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। শ্রদ্ধা জানান ৩০ লক্ষ শহীদের প্রতি।

Post MIddle

picture-1

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাতির পিতা এই বাংলাদেশ স্বাধীন না করলে শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নত হতো না, নতুন বিভাগ হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন বিভাগ খোলার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রিক চিকিৎসা ও শিক্ষার উপর প্রত্যক্ষভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মনোবিজ্ঞান, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান ছাড়াও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটে এ ধরনের বিশেষায়িত শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

 

উপাচার্য বলেন, মানসিক সমস্যা সমাধানে শারীরিক শিক্ষার সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বিবেচনা করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, হতাশার মাঝেও আশার আলো দেখতে হবে। কিছু লোক আজ বিপথগামী হয়েছে। সন্তানদের সন্ত্রাসের কবল থেকে রক্ষা করতে হলে যোগাযোগ স্বাস্থ্যের সাথে সাথে সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য কাজ করতে হবে। পরিশেষে উপাচার্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার মাধ্যমে আলোকিত সামাজিক জীবন গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে শুভেচ্ছা ক্রেস্ট প্রদান করেন উপাচার্য। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফের স্বাগত বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রফেসনাল মাস্টার্সের ছাত্র সৈয়দ মাহবুব হামিল ও প্রথম বর্ষ অনার্সের ছাত্রী হুমায়রা আনজুম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন। ##

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট