জাবিতে নির্মিত হচ্ছে ডিএনএ বারকোড গবেষণাগার

JU-pixজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম ডিএনএ বারকোড গবেষণাগার।
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহযোগিতা এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গবেষণাগারটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

 

 
এরই মধ্যে নির্মাণ কাজের অনেকাংশ শেষ হয়ে গেছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কাজ শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন, গবেষণাগারের উপ-প্রধান কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন।

 

তিনি বলেন, সারাবিশ্বে যেসব প্রাণী আছে তার মধ্যে ৭৫ ভাগই পোকা-মাকড়। আর এই গবেষণাগারে এসব পোকা-মাকড় নিয়ে গবেষণা করা হবে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে কোন পোকা-মাকড় উপকারী আর কোনটি ক্ষতিকর তা শনাক্ত করা হবে।
সাধারণ পোকা-মাকড়ের প্রজাতি-গঠন তাদের রং, পাখা দেখে শনাক্ত করা হয়। যাতে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ডিএনএ শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

 

 

 
বাংলাদেশে যেসব পোকামাকড় এখনো পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি, তাদের জিনের মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। এসব পোকা-মাকড়ের ভূমিকা মনোকুলার বা জিন পর্যায়ে গবেষণা করা হবে, তিনি এটাও বলেন।

 

মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ইতোমধ্যে গবেষণারের ল্যাবে বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১২০ প্রজাতির সাধারণ, ৪০ প্রজাতির প্রজাপতির মথ প্রজাপ্রতি এবং ৫০ প্রজাতির ফড়িংয়ের নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

 

 

Post MIddle

 
এছাড়া মশা, মাছি, বিটল, হোপার, এফিট, ইত্যাদি প্রজাতির পতঙ্গ নিয়ে গবেষণা করা হবে। এর মাধ্যমে কৃষি ও শস্য উৎপাদনে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার্থে সেসব পোকা-মাকড়ের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। একইসঙ্গে ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের হাত থেকে কৃষি রক্ষায় প্রয়োজনীয় কৌশল আবিষ্কার করা হবে।

 

 
তিনি বলেন, গবেষণাগারে শিক্ষক ও গবেষকরা গবেষণা চালাবেন। সঙ্গে সংশিষ্ঠ থাকবেন, তাদের বৃত্তি দিয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। যা দক্ষ গবেষক তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

 

 

 

জিন নিয়ে গবেষণার জন্য যেসব যন্ত্রের দরকার তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য পিসিআর (আমেরিকান), জেল ডকুমেন্টটেশন (আমেরিকান), জিন সিকুইনসার (জার্মানি)। এসব যন্ত্রাংশ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু করা যাবে।

 

 
সারা বিশ্ব পরিচালিত হচ্ছে জিনের মাধ্যেমে। স্মরণশক্তি, কথা বলা, কাজ করাসহ বুদ্ধমত্তার পরিচয় তা জিনের সাহায্যে করা হচ্ছে। আর এই জিনের মাধ্যমেই বিশ্বমানের গবেষণার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। এই পদ্ধতিতে আমরা সঠিক ও নির্ভুলভাবে বিভিন্ন প্রজাতির পতঙ্গ শনাক্ত করতে পারবো। এতে যেমন প্রজাতি টিকে থাকবে, তেমনি এর উপকারে রক্ষা পাবে জীববৈচিত্র।

 

 
গবেষণাগারের প্রধান কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার বলেন, এই গবেষণাগারের মাধ্যমে এদিকে যেমন বিশ্বের সব পোকা-মাকড় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে, যা আমাদের জ্ঞান ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করবে। একই সঙ্গে সব পোকা-মাকড়ের উপকার এবং ক্ষতির দিক জেনে তার ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত করা যাবে।

 

লেখাপড়া২৪/এমটি/১৩৩

পছন্দের আরো পোস্ট