ঢাবি প্রাচ্যকলা বিভাগে শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী বুধবার (১ জুন ২০১৬) জয়নুল গ্যালারীতে শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের মধ্য থেকে ৫টি পর্যায়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন উপাচার্য।

 

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাচ্যকলা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সাত্তার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পুত্র প্রকৌশলী ময়নুল আবেদিন এবং শিল্পসমালোচক মোস্তফা জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মলয় বালা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ফকির।

 

01-06-2016_Oriental Art (1)উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তাদের মধ্যে মেয়েরা এগিয়ে আছে, সেজন্য আমরা আনন্দিত। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে, পিছিয়ে থাকলে চলবে না। তাহলে সমাজ এগিয়ে যাবে। শিল্পীদের সৃষ্টিশীল মানসিকতা নিয়ে শিল্পকর্ম করতে হবে। শুধুমাত্র পেশাজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ নয়, দেশের জন্য শিল্প সৃষ্টি করতে হবে। পৃথিবীর জন্য শিল্পী তার শিল্পকর্ম নিয়ে মানবতার জয়গান গেয়ে এগিয়ে যাবেন। উপাচার্য শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তুলতে যে ক’জন মনীষী ভূমিকা রেখেছেন, তিনি তাদের অন্যতম। বাঙ্গালি জাতির স্বাতন্ত্র্য, স্বকীয়তা জাগ্রত করতেও তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন। শিল্পাচার্য বলতেন, ‘বাঙালি জাতির অনেক দীনতার মধ্যে সবচেয়ে বড় দীনতা রুচিবোধের’। রুচিবোধের এই দীনতা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসতে হবে শিল্পী সমাজসহ সকলকে। সকলের মাঝে রুচিবোধ সৃষ্টি করতে হবে। শিল্পের সাধনা করলে, সুন্দরের অনুসারী হলে রুচির দৈন্যতা থাকবে না। তাই শিল্পের সাথে থাকতে হবে। আমরা শিল্পকে সেজন্যই গুরুত্ব দেই। উপাচার্য নবীন শিল্পীদের শিল্পের গুণগত মানের প্রতি দৃষ্টি রাখতে আহ্বান জানান।

 

Post MIddle

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। শিল্পকর্ম পরিদর্শন করে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস প্রাচ্যরীতিতে আঁকা চিত্রকর্মগুলো শিল্পপ্রেমীদের বিমোহিত করবে।

 

বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে বিএফএ সম্মান ও এমএফএ প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অংশগ্রহণকারী ৩৮জন শিক্ষার্থীর নির্বাচিত ৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। শিল্পকর্মগুলোতে প্রাচ্যচিত্রকলার সমৃদ্ধ ধারা এবং ঐতিহ্যের অনুষঙ্গের প্রভাব পাওয়া যায়। শিল্পকর্মে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা হল- নিরীক্ষাধর্মী পুরস্কার – সুস্মিতা সাহা রিমি (এমএফএ, ২য় পর্ব, ২০১৩-২০১৪), শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার – হরেন্দ্র নাথ রায় (বিএফএ সম্মান, ৩য় বর্ষ, ২০১৪-২০১৫), শিল্পী শফিকুল আমীন স্মৃতি পুরস্কার – হাসুরা আক্তার (বিএফএ সম্মান, ৪র্থ বর্ষ, ২০১৪-২০১৫), শিল্পী আমিনুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার – শাহনাজ আক্তার (বিএফএ সম্মান, ৩য় বর্ষ, ২০১৫-২০১৬) এবং শিল্পী রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার – মুনমুন আলম খান (বিএফএ সম্মান, ২য় বর্ষ, ২০১৫-২০১৬।

 

প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আগামী ৭ জুন পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট