ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা বিষয়ক কর্মশালায় শিক্ষামন্ত্রী

1865কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাই বেকারত্ব দূর করার অন্যতম পথ। সাধারণ উচ্চশিক্ষা নিয়ে বছরের পর বছর বেকার থাকার চেয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা উত্তম। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আয়োজিত ‘আসন্ন ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা পরিচালনা বিষয়ে কেন্দ্র সচিবদের করণীয়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।

 

দেশের সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসমূহে আগামী ১৬ জুন থেকে শুরু হওয়া ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা শেষ হবে ২৫ জুলাই। এ পরীক্ষায় দেশের সরকারি-বেসরকারি ৪৫৬টি প্রতিষ্ঠানের ১,৯৩,৯১৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ১,৭২,৫৮২ জন ছাত্র এবং ২১,৩৩৬ জন ছাত্রী।

 

শিক্ষাসচিব মো: সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব ড. অরুনা বিশ্বাস, মো: হেলাল উদ্দিন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড, জীনাত ইমতিয়াজ আলী ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: মোস্তাফিজুর রহমান বক্তৃতা করেন। কর্মশালায় দেশের সরকারি-বেসরকারি ২৫৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

Post MIddle

জাতীয় ও বিশ্বচাহিদার প্রেক্ষিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার সময় এসেছে। জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন বা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে এদেশের নতুন প্রজন্মের অধিকাংশকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। চীন, জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ উন্নত দেশসমূহে কারিগরি শিক্ষার এনরোলমেন্ট ৬০% এর ওপরে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ২০২০ সালের মধ্যে আমরা কারিগরি শিক্ষার এনরোলমেন্ট ২০%, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০%-এ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা ৬০%। তিনি বলেন আমরা কারিগরি শিক্ষার অবকাঠামো, জনবল কাঠামো, শিক্ষাক্রম, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রই ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, প্রতি উপজেলায় কারিগরি স্কুল, বিশ্বমানের টেকনিক্যাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রতি বিভাগে মহিলা পলিটেকনিক স্থাপন, ৪টি ল্যান্ড সার্ভে কলেজ, ৩টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের কাজ চলছে। পলিটেকনিকসমূহে নতুন আরো একলক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষে বিদ্যমান পলিটেকনিকসমূহের অবকাঠামোগত সংস্কার, নতুন ২৩ টি বিশ্বমানের পলিটেকনিক স্থাপনসহ নতুন ১২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে এখাতে ৫টি প্রকল্প চালু আছে। এবছর দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ও ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে অতিরিক্ত ২৫,৫০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কারিগরি শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগমূখী বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা। শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করে এক্ষেত্রে কোনা লাভ হবে না। আমরা সাধারণ শিক্ষার ন্যায় এক্ষেত্রেও শান্তিপূর্ণ ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন বোর্ড কর্তৃক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, সংরক্ষণ ও সরবরাহ, ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র নেয়া ও খোলা, পরীক্ষাগ্রহণসহ সকল স্তরে সতর্কতার সাথে নিয়ম-কানুন পালন করা এবং পরীক্ষা চলাকালীন বিধিবদ্ধ সকল নির্দেশনা যথাযথভাবে মানতে হবে। ব্যত্যয় ঘটলে শাস্তি। সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ল্যাব ও ওয়ার্কশপ সুবিধা তুলনামূলকভাবে ভালো থাকার বিষয় উল্লেখ করে তিনি সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারিক ক্লাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকার অন্যান্য বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীদেরও সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানান।

 

সভাপতির বক্তৃতায় শিক্ষাসচিব সোহরাব বলেন খুব শীঘ্রই এমন সময় আসছে যখন কারিগরিই হবে প্রধান শিক্ষা। তারজন্য আমাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। তিনি সঠিক মানসম্পন্ন পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করে বলেন গুণগত মানসম্পন্ন পরীক্ষার সুনামের কারনে দেশে-বিদেশে যে কোনো জায়গায় আমাদের সনদপ্রাপ্তরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে চাকরি পাবে।

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট