নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে ঢাবি উপাচার্যের শোক

DU LOGOউপমহাদেশের প্রথম নারী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’র সম্পাদক নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

 

আজ ২৩ মে ২০১৬ সোমবার এক শোকবাণীতে উপাচার্য বলেন, নূরজাহান বেগম ছিলেন নারী সাংবাদিকতার একজন পথিকৃৎ ও সাহিত্যিক। বাঙালি নারী জাগরণের লক্ষ্যে উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণাই শুধু নয়, তিনি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। নারী প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে সৃজনশীল নারী ব্যক্তিত্বের সাহিত্য বিকাশে তাঁর অবদান অসাধারণ। তাঁর পিতার হাত ধরে এদেশের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুসলিম নারী সমাজের প্রগতিশীলতার পথে তিনি আলোকবর্তিকা ছড়িয়েছেন। তাঁর অবদানের জন্য জাতি তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। উপাচার্য নূরজাহান বেগমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

 

Post MIddle

নূরজাহান বেগম ১৯২৫ সালের ৪ জুন চাঁদপুরের চালিতাতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ থেকে তিনি আইএ এবং ১৯৪৬ সালে একই কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন।

 

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নারীবিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’র সম্পাদনায় সূচনালগ্ন থেকে জড়িত ছিলেন তিনি। প্রায় ছয় দশক ধরে বেগম পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন নূরজাহান বেগম। এতদ্দেশে নারীর সার্বিক উন্নয়ন ও সাহিত্যক্ষেত্রে অবদানের জন্য নূরজাহান বেগম বহু পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রোকেয়া পদক পান। এছাড়া, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘ, কাজী জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ ট্রাস্ট, রোটারি ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে তিনি পদক লাভ করেন। সাহিত্যক্ষেত্রে মেয়েদের এগিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে বেগম পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। ১৯৫০ সালে এটি ঢাকায় চলে আসে। বেগম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন নূরজাহান বেগমের বাবা সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ ‘সওগাত’ পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন। ‘বেগম’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। তবে চার মাস পর থেকেই পত্রিকাটির সম্পাদনা শুরু করেন নূরজাহান বেগম। তাঁর স্বামী দৈনিক ইত্তেফাকের কচি-কাঁচার মেলার সাবেক পরিচালক প্রয়াত সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই।
উল্লেখ্য, আজ ২৩ মে ২০১৬ সোমবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নূরজাহান বেগম মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ফ্লোরা নাসরিন খান ও রিনা ইয়াসমিন মিতি নামের দুই মেয়ে ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পুরান ঢাকার শরৎ গুপ্ত রোডে নিজস্ব বাসভবনে তার নামাজে জানাজার পর তাঁকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট