বরিশাল অঞ্চলের অধ্যক্ষদের সাথে এনইউ ভিসির মতবিনিময়
আজ (০৬-৫-২০১৬ তারিখ) শুক্রবার বিকেল ৩ টায় সরকারি বিএম কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বরিশাল বিভাগের সকল কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যবস্থা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির ভাষণে উপাচার্য সকলকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে বলেন, “৬৮৫ টি অনার্স ও মাস্টার্স কলেজ, ১২৩ টি মহিলা কলেজ, ৩৬৪টি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানসহ মোট ২১৯১টি কলেজ, ২১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী এবং ৬০ হাজার উর্ধ্ব শিক্ষক নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে দেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, নদী-উপকূলীয় এলাকা, হাওড়, দুর্গম পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এ দেশের লক্ষ লক্ষ অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার একমাত্র আশা-ভরসার স্থল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে এদের সিংহভাগই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ লাভ করতে পারত না। এটি আমাদের সবার বিবেচনায় থাকা আবশ্যক। তবে উচ্চ শিক্ষার বিস্তৃতি ঘটালেই যথেষ্ট নয়।
এ সব লক্ষ লক্ষ তরুন শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদ হিসেবে নিজেদের তৈরি করে শিক্ষাজীবন শেষে তারা দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও কল্যানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সে লক্ষ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এখন আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্র সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধি ও কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়নে ১৩০০ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

আশা করি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে এ দুটি প্রকল্প খুবই সহায়ক হবে। এছাড়া, কলেজ শিক্ষকদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম জোরদার করা হয়েছে। সস্তা নোট ও গাইড বই থেকে শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন বইপাঠমুখী করতে টেক্সট বই রচনার একটি প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে। কলেজসমূহের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতার ধারা সৃষ্টি করতে পারফরমেন্সভিত্তিক কলেজ র্যাংকিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আগামী ২০শে মে ঢাকায় মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে র্যাংকিং-এ নির্বাচিত কলেজসমূহকে পুরস্কৃত করা হবে। আমরা যেসব কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি, তা বাস্তবায়িত হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর একটি গতিশীল, মানসম্পন্ন, বিকেন্দ্রীকৃত উচ্চশিক্ষার মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠবে; অবসান ঘটবে সকল অনিশ্চিয়তা, শঙ্কা ও বিতর্কের। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার আমাদের এই কর্ম-প্রচেষ্টায় শামিল হতে আমি আপনাদের সকলের প্রতি আহবান জানাই।”
সভায় বিভিন্ন কলেজের ১৭০ জন অধ্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন। এঁদের মধ্যে প্রফেসর অধ্যক্ষ মহসীন উল ইসলাম আবুল, অধ্যক্ষ এস. এম. ইমানুল হাকিম, অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক, অধ্যক্ষ পারভীন আক্তার, অধ্যক্ষ জাফর আহমেদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, অধ্যক্ষ এ কে এম এনায়েত হোসেন, অধ্যক্ষ অলিউল ইসলাম, অধ্যক্ষ এ কে মজিবুর রহমান, অধ্যক্ষ বিমল চক্রবর্তী, অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর খান, অধ্যক্ষ সামসুল আলম সহ ২০ জন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
সভার শুরুতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ নোমান উর রশীদ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার শাখা পরিচালক জনাব মো. মুমিনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনের ক্ষেত্রে সফ্টওয়ার তৈরিসহ এ পর্যন্ত গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপাচার্য ছাড়াও, বি এম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস.এম. ইমানুল হাকিম ও আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. অলক কুমার সাহা শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
লেখাপড়া২৪.কম/এনইউ/পিআর/তালহা-১২০৭