শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে মাউশির চিঠি

MAUSIপ্রায় চার বছর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালায় বলা হয়েছিল, সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার কোনো শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিয়ে এক দিনে অন্য প্রতিষ্ঠানের সীমিতসংখ্যক (১০ জনের বেশি নয়) শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন।

 

নীতিমালা জারির শুরুর দিকে কড়াকড়ির কারণে কোচিং-প্রাইভেট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হলেও কিছুদিন পর শিক্ষকেরা আবারও আগের মতো কোচিং-প্রাইভেটে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ রকম পরিস্থিতিতে আবারও এই নীতিমালা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ জন্য মাউশি বুধবার (সই ২৮ এপ্রিল) এক চিঠিতে ২০১২ সালের জুনে জারি করা নীতিমালাটি অনুসরণ করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছে। একই পত্রে বিষয়টি তদারকি করার জন্য মাউশির অধীন আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

মাউশির সহকারী পরিচালক সাখায়েত হোসেন বিশ্বাসের সই করা ওই পত্রের অনুলিপি প্রত্যেক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। সাখায়েত হোসেন বিশ্বাস বলেন, নীতিমালাটি বেশ আগের করা। তাই নীতিমালাটি বাস্তবায়ন করতে সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

 

Post MIddle

প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনেও কোচিং-প্রাইভেট বন্ধের বিধান রাখা হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আবারও নড়েচড়ে বসল মাউশি।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চলাকালে কোনো শিক্ষক কোচিং করাতে পারবেন না । তবে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে শুধু অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন । এ ক্ষেত্রে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের জন্য সরকারনির্ধারিত টাকা রসিদের মাধ্যমে নেওয়া যাবে।

 

 

নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে সরকারি-বেসরকারি স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক), কলেজ (উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর), মাদ্রাসা (দাখিল, আলিম, ফাজিল, কামিল) ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর এমপিও স্থগিত থেকে শুরু করে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত পর্যন্ত করা যাবে। এমপিওর বাইরের কোনো শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বেতন-ভাতা স্থগিতের পাশাপাশি তাঁকেও বরখাস্ত করা যাবে। কোচিং-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে সরকার পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি বা অধিভুক্তি বাতিল করতে পারবে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর অধীনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট