খুবিতে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের পুনর্মিলনী

Khulna Universityআজ (৩০ এপ্রিল) শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের বিশবছর পূর্তি উপলক্ষে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে উৎসবমূখর পরিবেশে পূণর্মিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি বলেন, কৃষিই আদি সভ্যতার উৎস এবং কৃষি আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুবাদে কৃষির অনেক সমৃদ্ধি হয়েছে, সভ্যতার চরম উৎকর্ষ হয়েছে। তবে আমরা যতোই উন্নতির চরম শিখরে উঠি না কেন, এমনকি আমরা যদি মঙ্গলগ্রহেও বসবাস করি, তা হলেও আমাদের খাদ্যের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীলতা থাকবে। তাই কৃষির গুরত্ব অতীতেও ছিলো,ভবিষ্যতেও থাকবে।

 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বজলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে প্রতিবেশ ও পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে, এর প্রভাবে কৃষি সেক্টরেও বিরূপ প্রভাব লক্ষ্যণীয়। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি কৃষিবিদ ও কৃষি বিজ্ঞানীদের নতুন নতুন গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং আঞ্চলিক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান। তিনি বলেন, এক একজন কৃষক, এক একজন ক্ষুদে বিজ্ঞানী, গবেষক। তাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে।

 

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমাানের স্বপনই এ দেশের কৃষকের স্বপ্ন, তিনি কৃষকদের নিয়ে ভাবতেন, কৃষির উন্নতি নিয়ে ভাবতেন। তার সেই স্বপ্ন আজ সার্থকতা লাভ করতে চলেছে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বাংলাদেশের অতীতের কোনো সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এতোটা সামগ্রিক সুসমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনি। তিনি বলেন বর্তমান সরকার কৃষির উন্নতির ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ও আন্তরিক। তাই এক্ষেত্রে নানামুখি পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তিনি কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ ও দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য কৃষিবিদ ও গবেষকদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশে কৃষি শিক্ষায় স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।

 

Post MIddle

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ২০বছরপূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান এবং এই ডিসিপ্লিন থেকে শিক্ষালাভকারী গ্রাজুয়েটবৃন্দ কৃষিক্ষেত্রে কেবল চাকরি নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করেছে। নানা ক্ষেত্রে অগ্রগতি লাভ করছে। তবে শিল্পের চেয়ে এ ক্ষেত্রে কৃষির অবদান বেশি। তিনি বলেন, আমাদের সবার শেকড় কৃষিতে। আমাদের এই এগিয়ে যাওয়ার পেছনে কৃষক ও কৃষিবিদদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।

 

উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি সম্পর্কিত অনেকগুলো ডিসিপ্লিন রয়েছে। এসব ডিসিপ্লিনের জন্য মাঠগবেষণার জন্য জমি প্রয়োজন যা আমি সমাবর্তন বক্তব্যেও তুলে ধরি। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ প্রয়োজন। এজন্য জমি বরাদ্দের ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশীর আহমেদ-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুল আহসান ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আব্দুল লতিফ।

 

এছাড়া সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী । স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহবায়ক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা এবং ডিসিপ্লিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন । এর আগে এ উপলক্ষে সকাল ৯ টায় ক্যাম্পাসে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয় । পরে স্মৃতি রোমন্থন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট