শাবির বেপরোয়া বাস চালক আনোয়ার 

DSC00356শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিআরটিসির ভাড়া করা নাইয়রপুলগামী বাসের একটির চালকের উদ্ধতপূর্ণ আচরন ও বেপোরোয়া বাস চালনায় নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নাইয়রপুলের বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা এই অভিযোগ করেন।বৃহস্পতিবার ওই বাসচালক উদ্ধতপূর্ণ আচরন মাত্রা ছাড়ালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এই অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযুক্ত এই বাস চালকের নাম আনোয়ার, তিনি বিআরটিসির অধিনে বাস চালনা করেন।

 

বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১.১০ মিনিটে শহরের নাইয়রপুলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বিআরটিসি গাড়ি নং ঢাকা মেট্রো- ব ১১-৪৯৩৭ এর বাসের চালক শুরু থেকেই বেপরোয়াভাবে গাড়ী চালাতে থাকেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাকে সাবধানে গাড়ি চালাতে বললেও কর্ণপাত করেননি ওই বাস চালক। এমনকি শহরের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা নামতে চাইলে তাদেরকে ওই স্থানে না নামিয়ে বরং তাদের সাথে খারাপ আচরন করেন ও উচ্চস্বরে অপমানজনক কথাবার্তা বলেন।

 

ঘটনার ভুক্তভোগী লোকপ্রশাসন বিভাগের এক ছাত্রী জানান, নগরীর ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই রোডে নামতে চাইলে ওই চালক বাস না থামিয়ে ছাত্রীকে গেটে দাড় করিয়ে রেখে বাস চালিয়ে শাহী ঈদগাহ পয়েন্টে নিয়ে থামান। শুধু লোকপ্রশাআসন বিভাগের ওই ছাত্রী নয়, চৌহাট্টাস্থ শহীদ সামসুদ্দীন মেডিকেল হাসপাতালের সামনে নামতে চাওয়া আরেক ছাত্রীর সাথেও বাজে আচরন করেন তিনি। এক পর্যায়ে বাস চালক আনোয়ার ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন ‘বাসে কি নতুন যাতায়াত করছেন ? শিডিউল দেখে বাসে উঠতে পারেন না।’ অথচ শহীদ সামসুদ্দীন মেডিকেল হাসপাতালের সামনে দিয়ে ওইসময় নাইয়রপুলের বাস ছাড়া অন্য বাস যাতায়াত করে না।

 

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্র আরো জানায়, শহর থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে আসার সময় সুবিদ বাজার পয়েন্ট, লন্ডনী রোড, মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে থেকে সংকেত দিলেও বাস খালি থাকা সত্ত্বেও ওই বাস চালক কোন শিক্ষার্থীকে বাসে উঠায়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা বাসে নামার জন্য সংকেত দিলে কাউকে ফটকে না নামিয়ে এক কিলোমিটার রোডে এসে বাস থামান। এসময় বাস ভেতরে যাবেনা বলে তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন।

 

Post MIddle

এসময় বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা তাকে না যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি উদ্ধতভাবে বলেন, ‘আমার নাম আনোয়ার। পরিবহন প্রশাসকসহ সবাই আমাকে এক নামে চেনে। কিছু বলার থাকলে পরিবহন প্রশাসকের কাছে গিয়ে বলেন। আমি এখন ভিতরে যাবো না। আমার ক্ষিদা লাগছে, আমি এখন খাইতে যাবো।’ বলে তিনি কোনদিকে না তাকিয়ে রেস্টুরেন্টে চলে যান।

 

নাইয়রপুলের বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারী ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও ওই ড্রাইভার রাস্তায় সংকেত দিলেও বাসে উঠায় না, প্রায় সময়ই শহরের বিভিন্ন স্থানে নামতে চাইলে ওইখানে না নামিয়ে অনেক সামনে বড় পয়েন্টে নিয়ে নামিয়ে দেয়।

 

অপর এক শিক্ষার্থী হাসান মেহেদী বলেন, নাইয়রপুলেই এই ড্রাইভার প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরন করেন, যথাযথ স্থানে নামিয়ে দেন না এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান , যা থেকে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও আছে। তিনি এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা কামনা করেন।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, এটি খুবই দু:খজনক ঘটনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বাস চালকেরই শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরন করার অধিকার নাই। খুব শিগগিরই অভিযুক্ত এই বাস চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্থ করে বলেন, এর আগেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট