পান্তা ভাতে বিষ!
আগামীকাল পহেলা বৈশাখ। বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উৎসব। বৈশাখ ঘনিয়ে এলেই যেন বাঙালি জাতি তাদের চিরাচারিত বাঙ্গালিয়ানাকে প্রানপনে আঁকড়ে ধরার প্রয়াস প্রকট হয়ে উঠে। কিন্তু আজ পাঁচলক্ষাধীক বেসরকারী শিক্ষক- কর্মচারীর সেই প্রয়াস ধ্বংস হতে চলেছে। অষ্টম পে- স্ক্লেলের আওতাভুক্ত সবাই বৈশাখী ভাতা পেয়ে দু গালভরা হাসি নিয়ে পহেলা বৈশাখ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর বেসরকারি শিক্ষকরা সেই হাসি দু গালে হাত দিয়ে উপভোগ করছেন।
অনেক ক্রন্দন আর আর্তনাদের পর নতুন পে- স্কেলে বেতন পেলাম। এজন্য গলাপানিতে দাড়িয়েও ধন্যবাদ জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট মহলকে। আমরা আজ নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আমরা শুধু পহেলা বৈশাখ নয়, প্রতিদিনিই পান্তা ভাত খাই। কিন্তু এখন পান্তা খেতে ভয় পাচ্ছি। মনে হচ্ছে পান্তা ভাতের মধ্যে বিষ আছে। এটা সেই বিষ যে বিষ খেয়ে মানুষের উঁচু মাথা নিচু হয়ে যায়। মানুষ তার জাত পরিচয় হারিয়ে ফেলে। পহেলা বৈশাখের বাজারে সরকারি চাকরিজীবীদের হাতে ঝোলানো রূপালি ইলিশের ঝলকানিতে শিক্ষকরা চোখে ঝাপসা দেখছেন। বৈষম্যের বেড়াজালে শুধু একপক্ষকে বৈশাখী ভাতা প্রদান করে আমাদের হেওপ্রতিপন্ন করাটাই মনেহচ্ছে এবারের পহেলা বৈশাখের মূল আনন্দ !আমরা এখন উটের জকি।
তারপরও আমাদের ভালো লাগছে আমরা কিছুটা হলেও দরকারি, পুরোপুরি বেদরকারি নই। আপনাদের পান্তা ভাত খেতে ইচ্ছে হলে বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়ীতে চলে আসবেন। পেট ভরে খেয়ে যাবেন আর আমাদের জন্য দোয়া করে যাবেন। বিঃ দ্রঃ সাথে লবন নিয়ে আসবেন।
লেখকঃ মোস্তাফিজুর রহমান শামীম, প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, ভেড়ামারা কলেজ।