ইবির বঙ্গবন্ধু পরিষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী
নতুন কমিটি গঠনের জের ধরে প্রকাশ্য বিরোধের পর এবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদ। নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটি সংবাদ সম্মেলন করার পরপরই নির্বাচিত সাবেক কমিটি সাধারণ সভা আহ্বান করেছে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীতে নতুন করে কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে নব গঠিত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, জাকির হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু, সাবেক কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন সহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এসময় লিখিত বক্তব্যে পরিষদের নেতারা বলেন-‘সাবেক কমিটি মেয়াদ শেষ করার পর দীর্ঘ ৪ বছরের মধ্যে কোন নির্বাচন দিতে পারেনি। পরিষদের কোন সভা-সমাবেশ বা দৃশ্যমান কোন কর্মসূচিও দেয় নি। নতুন সদস্য অন্তুর্ভুক্তি সহ নানা কাজ আটকে আছে। এভাবে কোন পরিষদ চলতে পারেনা।’
নব গঠিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন-‘আহ্বায়ক কমিটি তিনমাসের মধ্যে একটি নির্বাচন আয়োজন করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যারা কাজ করতে চাই তাদের সমন্বয়ে এগিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। কেন্দ্রীয় সংসদ সাবেক কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দিয়েছে। ফলে সাবেক কমিটির কোন কার্যক্রম বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রম বলে বিবেচিত হবে না।’ সাবেক কমিটির আর কোন বৈধতা নেয় বলেও দাবি করেন তিনি।এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পরপরই বেলা দেড়টার দিকে এক লিখিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সভা আহ্বান করে নির্বাাচিত সাবেক কমিটি। সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রুহুম কে এম সালেহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে-শনিবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের নতুন সদস্য অন্তর্ভক্তি ও নির্বাচন সহ বেশ তিনটি এজেন্ডা নিয়ে সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়েছে। এব্যাপারে সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ বলেন-‘কেন্দ্রীয় পরিষদের অনুমতি ও পরামর্শক্রমে সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছে।’
নির্বাচিত কমিটির কোন বৈধতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন-‘বঙ্গবন্ধু পরিষদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়ে থাকে। আহ্বায়ক কমিটি তিন মাসের জন্য নির্বাচন পরিচালনার কাজ করতে পারেন। এছাড়া তাদের আর কোন এখতিয়ার নেই। কেন্দ্রীয় পরিষদের মতামত সাপেক্ষ্যে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবো।’
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৬ এপ্রিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বাংলা বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী সভাপতি হিসেবে ও অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পর নির্বাচনের কথা থাকলেও মেয়াদ শেষ হয়ে চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও নির্বাচন দিতে পারেনি তারা। ফলে পরিষদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল চরম আকার ধারণ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক ইবির সাবেক কমিটি বিলুপ্ত করে ৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়।