নাজিমুদ্দিন হত্যায় বিক্ষোভ-অবরোধে উত্তাল জবি

Jagannath pic-4পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকার একরামপুরে নাজিমুদ্দিন নামে জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয়ের আইন বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, গতকাল(বুধবার) রাতে ক্যাম্পাসে ক্লাস শেষে তিনি গেন্ডারিয়ার মেসে ফিরছিলেন। সূত্রাপুরের একরামপুর মোড়ে আসলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে। এ সময় তাঁর সঙ্গে দুর্বৃত্তদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে তাঁর মাথায় কোপ দিলে, তিনি মাটিতে পড়ে যান। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য দুর্বৃত্তরা নাজিমুদ্দিনের মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাজিমুদ্দিনের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজাওে এবং তিনি সিলেট জেলার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদ’ এর তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার নাজিমুদ্দিনকে সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ছিলেন বলে দাবী করেছেন।

 

তার ফেইেসবুক আইডি থেকে জানা যায়, তিনি একজন মুক্তমনা লেখক ছিলেন। ধর্মীয় উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখালেখি করতেন তিনি।এদিকে ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদকে হত্যার ঘটনায় আজ( বৃহস্পতিবার) পুরান ঢাকা জুড়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা। সকাল ৮ টা থেকে বিশ্ববিদ্যলয় ক্যাম্পাস ও এর আশেপাশে এ কর্মসূচী পালন করেন তারা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে।

 

বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন বাড়তে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আবারও মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে চলে আসে। এসময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়, জজকোর্ট, বাহাদুরশাহ পার্ক, কবি নজরুল কলেজ ও বাংলাবাজার এলাকার রাস্তা বন্ধ করে সেখানে টায়ার ও কাঠ জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

 

Post MIddle

বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠে। এসময় তারা পার্শ¦বর্তী বেশ করেয়েকটি দোকান ও গাড়িতে ভাংচুর চালালে পুলিশের সাথে ধস্তা-ধস্তি হয়। এরপর বেলা সোয়া দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনে নাজিমুদ্দিন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের দাবী জানিয়ে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচী সমাপ্ত ঘোষনা করেন। এছাড়া দ্রুত আসামিকে না ধরা হলে রবিবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে বলেও ঘোষনা দেওয়া হয়েছে।

 

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সদরঘাট থেকে গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ি ও লক্ষীবাজার সড়কে টানা সাড়ে চার ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। যার ফলে পুরান ঢাকা জুড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। এতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়ে পার্শ্ববর্তী স্কুল-কলেজগামী সাধারন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচী বৃহস্পতিবারের মতো স্থগিত করায় দুপুর আড়াইটার দিকে যান চলাচল স্বাভাবি হয়।

 

fd345acc-45ac-4bf0-aaa3-9f4843a99f6e

পছন্দের আরো পোস্ট