‘প্রথম প্রতিবন্ধী বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখি’

12715665_494470114093086_4355523564430816864_n

ডাক নাম ইদ্রিস। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি। জন্ম থেকেই পা দুটি বিকলাঙ্গ তার। তাই গ্রামের সবাই তাকে খোঁড়া ইদ্রিস বলে ডাকতো। মনে মনে কষ্ট অনুভব করলেও অক্লান্ত পরিশ্রম, অদম্য সাহস আর সীমাহীন মনের জোরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়েছেন তিনি। লেখাপড়া২৪.কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার জীবনের নানা সাফল্য কথা।

 

মাগুরা জেলার শালিখা থানার শরুশুনা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন ইদ্রিস। মাগুরা জেলা স্কুল ও যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন তিনি। কলেজ জীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান।

 

 

ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল বিচারপতি হওয়ার। কিন্তু কিছু নাম্বার কম পাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাননি । কিন্তু লক্ষ্য পূরণে অনড় ইদ্রিস ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার ব্যবস্থা বিভাগে। বর্তমানে তিনি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মেধায় অনন্য এই ইদ্রিস ইতোমধ্যে কোরআনে হাফেজ হয়েছেন ।

 

ছোট বেলায় গ্রামের ক্রিকেট দল থেকে বাদ দেওয়ায় মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন ক্রিকেটার হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখাবেন। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিচার বিভাগের বিভাগীয় ক্রিকেট দল, মাগুরা জেলা ক্রিকেট দল ও কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্রিকেট দলে খেলছেন। বিসিবি’র অধীনে বাংলাদেশে জাতীয় প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের একজন খেলোয়াড় ইদ্রিস। বর্তমানে তিনি অনুশীলন করছেন ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্ব প্রতিবন্ধী ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ।

Post MIddle

12744299_494470120759752_8039736513315885288_n

 

সম্প্রতি প্রথম প্রতিবন্ধী হিসেবে সুস্থদের সাথে হিমু পরিবারের আয়োজনে কার্জন হল থেকে কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের বাড়ি গাজীপুর নুহাশপল্লী পর্যন্ত প্রায় ৬০ কি.মি পথ পায়ে হেটেঁ অতিক্রম করেন। দুইবার পায়ে হেটেঁ তিনি অতিক্রম করেন জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত দূরত্ব। তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ লিডারশীপ চ্যাম্পিয়ন দলেরও একজন সদস্য তিনি ।

 

ইদ্রিস আলী নিজেকে প্রতিবন্ধী হিসেবে মানতে নারাজ। তিনি বলেন , ‘কোন মানুষই প্রতিবন্ধী নয়, কিছু মানুষের কিছু শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকতেই পারে, তাই বলে তাদের প্রতিবন্ধী হিসেবে ছোট করে দেখা ঠিক না। প্রকৃত প্রতিবন্ধী তারা যারা মানসিক প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধীদের ভিক্ষা না দিয়ে শিক্ষার সুযোগ দিলে তারা আর সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না, রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবেই জীবন যাপন করবে।’

 

ইদ্রিস আলীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, সুস্থ প্রতিযোগীদের সাথে কলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত পায়ে হেটেঁ অতিক্রম করা, সাইকেল চালিয়ে তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত অতিক্রম করা, সাতাঁরে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া এবং ২০২০ সালের মধ্যে সেভেন সামিট জয় করা । প্রথম প্রতিবন্ধী বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করার স্বপ্নও দেখেন তিনি ।#

 

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট