২ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি বাকৃবির সাদ হত্যা মামলা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ছাত্র সাদ ইবনে মমতাজ হত্যাকান্ডের ২ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে নিজ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পিটুনিতে মারা যান তিনি। তখন লাশ নিতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সাদের বাবা বলেছিলেন, ‘আমি কোনো মামলা করব না। কারণ, এর বিচার কখনোই পাব না।’
সাদের বাবার এই আশঙ্কাই এখন সত্যি হতে চলেছে। কারণ, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের করা মামলার আসামি ১৪ জনের আটজন জামিনে ও ছয়জন ‘পলাতক’ রয়েছেন। সাদ মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ও আশরাফুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় এবং শেণি প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা সুজয় কুমার ও রোকনুজ্জামান আশরাফুল হক হলের একটি কক্ষে সাদকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। ওই রাতে সাদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে ময়মনসিংহের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মহিউদ্দীন হাওলাদার ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।
সাদের মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ ঘটনায় আরও কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা জড়িত বলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকে।
পরে সম্পূরক তদন্ত কমিটি করা হয়। এই কমিটির সুপারিশে ছাত্রলীগের আরও সাতজন নেতা-কর্মীকে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলার তদন্ত শেষে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সুজয় কুমার, রোকনুজ্জামান, সাদেকুর রহমান, রোকন, রেজাউল করিম, নাজমুল শাহাদাত, মুনতাকা মুফরাত, অন্তর চৌধুরী, সুমন পারভেজ, মিজানুর রহমান, ফয়সাল ইসলাম, মনোয়ারুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ ও প্রশান্ত দে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রথম আটজনকে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। এঁদের সবাই জামিনে আছেন। বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। কিন্তু পুলিশের কাছে এঁরা আজও পলাতক। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামিদের প্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।##
লেখাপড়া২৪.কম/এমএইচ