বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মানবেতর জীবনযাপন

Bগোপালগঞ্জে অবস্থিত বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি ) শিক্ষার্থীদের মানবেতর দিন কাটছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের গণরুমে । সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হল বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও ফজিলেতুন্নেসা হলের টিভি রুমটিই গণরুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে যেখানে প্রতি রুমে বেড সংখ্যা ২৩ টি হলেও শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০ জন ।

 

হল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী তিন হলে প্রায় ১০০০ এর বেশী শিক্ষার্থীর বসবাস। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট কাটানোর জন্য ফজিলেতুন্নেসা হল কর্তৃপক্ষ টিভি রুমটিকে গণরুম হিসেবে ব্যাবহার উপযোগী করে তোলে । গত বছরের ১ম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর গণরুমে উঠার সৌভাগ্য অর্জন করলেও এ বছর প্রথম বর্ষের মেয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটে আর হলে উঠা হয় নি ।

 

Aহিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার হিরা জানান, বাইরে মেয়েদের ব্যাচেলর না নেওয়ায় তারা শুরুতেই হলে উঠার দাবী করেছিল । স্বাধীনতা দিবস হলে নব্য অবস্থানকারী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মফিদুল হকের মতে, গণরুমে পড়ার পরিবেশ নেই, বেডের তুলনায় শিক্ষার্থী বেশী হওয়াতে তাদের জীবযাপন এই অল্প দিনেই অস্থির হয়ে উঠেছে । তিনি আরও জানান, টিভি রুমে টিভি ছাড়াও ক্যারাম ও অন্যান্য ইনডোর গেমের সামগ্রী থাকায় গণরুম খুবই বিব্রতকর থাকে । কিন্তু বাইরে আবাসন সংকট থাকায় ও যাতায়তের সুবিধার কথা চিন্তা করে তারা বাধ্য হয়ে গণরুমে আছে ।

 

Post MIddle

বিজয় দিবস হলের গণরুমে অবস্থানকারী ব্যাবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ খানের মতে, হল কর্তৃপক্ষে চাইলে অন্য সিংগেল রুমে তাদের স্থানান্তর করতে পারত । এতে একটি সিংগেল রুমে সর্বোচ্চ ৬ জন হয়, যার ফলে গণরুমে চাপ কমত । ফজিলেতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীরাও একই অভিযোগ করেন, তবে এদের ভিতরে কয়েকজন ইতোমধ্যে সিংগেল রুমে স্থানান্তরিত হয়েছে । কিন্তু গণরুমের অবস্থার পরিবর্তন হয় নি । বিজয় দিবস হলে অবস্থানকারী লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুনের মতে, টিভি রুমে শিক্ষার্থীদের অবস্থান অযৌক্তিক। মূল কথা হল, একমাত্র ৩য় ও ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের অবস্থান ছেলেদের দুই হলেই বেশী ।

 

উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি হল স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস হলে নতুন শিক্ষার্থী তোলার আবেদন শুরু হয়, সেখানে কম শিক্ষার্থীই সিংগেল রুম পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে!!! বাকীদের গণরুম দেওয়া হয় ।

 

তবে আশার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা দিবস হলের পাশে নতুন একটি হলের নির্মাণ কাজ চলছে যেখানে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর আবাসন সংকট দূর হবে । এছাড়া ভবিষ্যত অবকাঠামো (২০১৭ এর ভিতরে ) নির্মাণের অংশ হিসেবে মেয়েদের জন্য নতুন একটি হল স্থাপনের কথা বলা হয়েছে । সব মিলিয়ে এই সংকট যাতে দ্রুত দূর হয় এমনটাই সকল শিক্ষার্থীর দাবী ।##

 

লেখাপড়া২৪.কম/এমএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট