ঢাবিতে বৃত্তি ও পুরস্কার বিতরণ

sfsdfgঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন নাহার হলে ‘শামসুন নাহার মাহমুদ ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক ও বৃত্তি, প্রভোস্ট বৃত্তি এবং বার্ষিক সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা’র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান (১৯ মার্চ) শনিবার সন্ধ্যায় হলের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির চেক ও সনদপত্র তুলে দেন। একই সঙ্গে উপাচার্য হলের বার্ষিক সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতারও পুরস্কার বিতরণ করেন।

 

শামসুন নাহার মাহমুদ ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে “অগ্নি পরিধির মাঝে দাঁড়িয়ে শুনিয়েছেন কিণœর কন্ঠ” শীর্ষক ফাউন্ডেশন বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সংস্কৃতিকর্মী অধ্যাপক কাজী মদিনা। সদস্য-সচিবের বক্তব্য রাখেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুপ্রিয়া সাহা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপ্যাল হাউস টিউটর সৈয়দা মমতাজ শিরিন।

 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথির বক্তব্যে শুরুতেই বৃত্তিপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, পূর্বের নারীদের কি অবস্থা ছিল, নিঃসন্দেহে এগিয়েছে বহুদূর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সমান সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। শিক্ষায় ছাত্রীরা অনেক দূর এগিয়ে আছে। পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। সকল পেশায় মেয়েরা আছে। আজকের ছাত্রীরা আগামী দিনের বাংলাদেশ পরিচালনা করবে, নেতৃত্ব দিবে। শামসুন নাহার মাহমুদ নারী শিক্ষা ও নারীর সামাজিক উন্নয়নে আজীবন কাজ করে গেছেন। তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নবীণ শিক্ষার্থী ও পদকপ্রাপ্তদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে, তাঁকে আরও জানার চেষ্টা করতে হবে।

 

Post MIddle

উপাচার্য এই মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ প্রাণের আত্মদান এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, মার্চ মাস আসার অর্থ আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কারণ ১৯৭১’র মার্চ আমাদের অস্তিত্বের ভীত রচনা করেছে। এ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। আমাদের তা উপলব্ধি করতে হবে। আমাদের জানতে হবে জাতির জনক সম্পর্কে। এভাবে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করতে হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা অনেকেরই আমরা মূল্যায়ন করতে পারিনি, তাঁদের আজকের জাতীয় জীবনের সুফল পৌঁছে দিতে হবে। আর সেই সুফল পৌছে দেয়ার দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের। একই সাথে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছেন, বঙ্গবন্ধুর সেই অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যেতেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান ।

 

অধ্যাপক কাজী মদিনা তাঁর বক্তৃতায় নারী জাগরণের অগ্রদূত মহিয়সী শামসুন নাহার মাহমুদের বর্ণাঢ্য জীবনের প্রসঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন, ভোটাধিকার, নারীমুক্তি ও শিশু অধিকার বিষয়ে তাঁর অবদান উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার সুযোগ্য শিষ্য ছিলেন শামসুন নাহার মাহমুদ। তাঁর আদর্শ ছিল সমাজকে সঙ্গে নিয়েই সমাজ সেবা, তাই সমাজকে যেমন উপেক্ষা করেননি তেমনি অস্বাকার করেননি যুগের দাবিকে। প্রাচীন আভিজাত্যবোধের সঙ্গে আধুনিক প্রগতিশীলতার এক অপূর্ব সমন্তয় ছিল তাঁর জীবনে। তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল বিস্তৃত। নারী শিক্ষা ও শিশু শিক্ষা ছিল শামসুন নাহারের সবচেয়ে আগ্রহের ক্ষেত্র। তাঁর আত্মপ্রকাশের আরেক ক্ষেত্র ছিল সাহিত্য সাধনা। চল্লিশের দশকে তিনি সমাজ ও নারী নিয়ে নানামুখী কাজ করেছেন। কর্মময় জীবন ও মহৎ কর্মের জন্যে আজও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন বাঙালির হৃদয়ে।

 

19-3-16 (2)২০১৬ শিক্ষাবর্ষে শামসুন নাহার মাহমুদ ফাউন্ডেশনের স্বর্ণপদক পেয়েছেন- খাদিজা রহমান (দর্শন বিভাগ)। মেধাবৃত্তি লাভ করেছেন- তাসলিমা আক্তার (তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ), শারমিন আক্তার (একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ), সামিয়া নাজ (শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ), নুশমা রহমান (পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট), সালওয়া মো. মোস্তফা (জিন প্রকৌশল ও জীব প্রযুক্তি বিভাগ)। সাধারণ বৃত্তি পেয়েছেন- মাধুরী পাল (উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ), লিপি খাতুন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ), আউলিয়া আক্তার (মার্কেটিং বিভাগ), জলি রানী কর (ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ), আসমা খাতুন (দর্শন বিভাগ) ও জেসমিন আক্তার (ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ) এবং এককালীন বই সাহায্য বৃত্তি পেয়েছেন শারমিন আক্তার (ইংরেজি বিভাগ) ও নাজমীন আক্তার (তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ)।

 

লেখাপড়া২৪.কম/ঢাবি/পিআর/এমএএ

পছন্দের আরো পোস্ট