আরব আমিরাতে দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব

united-arab-emirates-from-the-air_101571-1600x1200সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাঁরা পরিবার পরিজন ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানো, দেশীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করানোটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। বিদেশে বা প্রবাসে বেড়ে উঠা অনেক ছেলে মেয়ে  এখানে এখনও বাংলা ঠিক ভাবে পড়তে, লেখতে, এমন কি বলতেও পারে না। দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি থেকে দিন দিন অনেক দূরে সরে যাছে এসব নতুন প্রজন্ম। সংযুক্ত আরব আমিরাতে  দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মকে নিয়ে বিপাকে আছেন প্রবাসী অভিভাবকগণ।

 

সংযুক্ত আরব আমিরাতে দশ লাখেরও বেশি প্রবাসীদের আছে কেবল মাত্র দুটি দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবুধাবির একটি বাংলাদেশ ইসলামিয়া প্রাইভেট স্কুল এন্ড কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা (কেজি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত) ৬৬০ জন । অপরটি রাস আল খাইমার বাংলাদেশ প্রাইভেট স্কুল এন্ড কলেজ, যার ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা (কেজি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত) মোট ৫১২ জন।

 

আমিরাতে অবস্থানরত প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার প্রবাসী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য নিতান্তই অপ্রতুল। পক্ষান্তরে প্রায় ২৫ লাখ ভারতীয় প্রবাসীদের আছে দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভারতীয়, বাংলাদেশি ছেলেমেয়েসহ নানান দেশি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করছে।সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেশীয়  শিক্ষা প্রতিস্টানে লেখা পড়ার মান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংকটের কারণে আমাদের দেশীয় অনেক ছেলেমেয়ে ইন্ডিয়ান বা অন্যান্য ভিন্ন দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্য হয়ে লেখা পড়া করছে।

 

Post MIddle

দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার চর্চা নেই বললেই চলে। তবে দুয়েকটি ভিন্নদেশীয় শিক্ষা প্রতিস্টানে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা রেখেছে। যা কিনা নিতান্তই অপ্রতুল। ফলে দেশীয় ছেলে মেয়েরা দিন দিন বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি বিমুখ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মকে  আমাদের জাতীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে যদি মিলনের ব্যবস্থা করে দেয়া যেত, যদি আমিরাতের প্রতিটি প্রদেশে অন্তত: একটা করে দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা যেত, তাহলে নতুন প্রজন্ম নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি বিমুখ হত না।

 

ভারত ও পাকিস্তান অনেক আগে থেকে এখানে তাদের দেশীয় ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার শক্ত ভীত প্রতিষ্ঠা করেছে। এখানে তাদের প্রচুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কালচারাল সেন্টার আছে। তাই তাদের ছেলেমেয়েরা এখানে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির অনুকূল পরিবেশে বেড়ে উঠছে। আর সে অনুপাতে আমাদের তা হয়ে উঠেনি।আমিরাতে দেশীয় প্রবাসী ব্যবসায়ীরা  শিক্ষাখাতে বা শিক্ষা প্রতিস্টানে বিনিয়োগে আগ্রহী নন। আর প্রবাসে আমাদের কমিউনিটির নামধারী এবং  দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও পরিচিতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংগটন গুলোও শিক্ষা প্রতিস্টান করার ক্ষেত্রে আগ্রহী নন। যদিও বা শিক্ষাখাতে বিনিয়োগে করা বা শিক্ষা প্রতিস্টান করা আমিরাতে একটি লাভজনক ব্যবসাও বটে।

 

আমিরাতে বাংলাদেশি প্রবাসীরা স্বাধীনতার আগে থেকেই অবস্থান করে আসছেন। স্বাধীনতার চার দশক পরেও জাতীয় স্বার্থে বা বৃহত্তর স্বার্থে প্রবাসেও সম্মিলিতভাবে কাজ করার কোন ক্ষেত্র এখনও হয়নি। দুবাই, শারজাহ, আজমান, আল আইন, ফুজিরাসহ আমিরাতের প্রতিটি প্রদেশে অন্তত একটি করে দেশীয় স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়নি।

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট