দোয়ার মাধ্যমে বান্দা নিজের কাঙ্খিত বস্তু লাভ করে থাকে

doa20150507104158হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- “দোয়া সব ইবাদাতের মূল” [সুনান তিরমিযি: ৩৩৭১]

দোয়া করা একটি বিস্ময়কর আমল। দোয়ার মাধ্যমে বান্দা নিজের কাক্ষিত বস্তু লাভ করে থাকে। দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদাত। এর বিনিময়ে রয়েছে সওয়াব ও প্রতিদান । কিছু আমল নিছক আখেরাতের উদ্দেশ্যে করতে হয়। এতে দুনিয়ার উদ্দেশ্য করলে সওয়াবের বিপরীতে গুনাহ হয়। আবার কিছু কাজ আমরা করি শুধুই দুনিয়ার কোনো কল্যাণকে সামনে রেখে। কিন্তু দোয়া একটি বিস্ময়কর আমল। আখেরাতে কোনো কিছু পাবার জন্য যেমন দোয়া করা যায়, ঠিক তেমনি দুনিয়ায় কোনো কল্যাণ লাভের জন্যেও দোয়া করা যায়।

 

আমরা নামাজের মধ্যেও দোয়া করি। এমনকি প্রতি রাকাতেই; সুরা ফাতিহায়। সরল পথ কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। চাই তার কাছে সাহায্য। দোয়া একটি অতি সহজ আমল। কল্যাণ লাভের অত্যন্ত সুলভ পদ্ধতি ও সূবর্ণ সুযোগ। আল্লাহ তাআলা আমাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য সদা উন্মুখ। তিনি এই আমাদেরকে লক্ষ করে বলেন- “তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের আহবানে সাড়া দিব।” [সুরা গাফের: ৬০]

 

আল্লাহ্ তাআলা অসীম দয়ালু ও মেহেরবান। তিনি বান্দার দোয়া শ্রবণ করেন। তাঁর দরবারে যত বেশি দোয়া করা হয় বান্দাকে তিনি ততবেশি দান করেন এবং প্রত্যেকটি দোয়ার বিনিময়ে ইবাদতের সওয়াব প্রদান করেন। পক্ষান্তরে যে বান্দা আল্লাাহ্ তাআলার দরবারে দোয়া করে না তার প্রতি তিনি নারাজ হন।

 

দোয়া করার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো শব্দ বা বাক্য প্রয়োগের বাধ্যবাধকতা আল্লাহ আআলার পক্ষ থেকে নেই। প্রত্যেকে নিজের বৈধ বাসনা পূরণের জন্য নিজ ভাষায় নিজের মত করে প্রতিপালকের কাছে চাইতে পারে। এজন্য বিশেষ  কোনো সময়েরও দরকার নেই। যখন খুশি আল্লাহ্ তাআলার দরবারে সরাসরি প্রার্থনা করা যায়। তবে বিশেষ বিশেষ সময়ে সহজে দোয়া কবুল হয়।

 

তবে সব মানুষ সঠিকভাবে চাইতে জানে না। কি চাওয়া উচিৎ- অনেক ক্ষেত্রে তাও বুঝে উঠতে পারে না। এ কারণে পবিত্র কোরআন ও হাদীস শরীফে দুনিয়া ও আখেরাতের সকল উদ্দেশ্য সম্পর্কীয় উত্তম দোয়াগুলো আল্লাহ্ তাআলার পক্ষ থেকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেন মানুষ যথা সময়ে এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে ডেকে নিজের সফলতা অর্জন করতে পারে। এ সব দোয়ার বিষয়বস্তু অনেক উচু মানের। অধিকন্তু এগুলোর শব্দমালা হৃদয় ষ্পর্শকরে এবং নূর সৃষ্টি করে।

 

অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে যে, এ সকল দোয়া বেশি বেশি জপলে খুব দ্রæত মানুষের রূহানী বা আধ্যাতিক উন্নতি সাধিত হয়। যা কঠিন মুজাহাদা ও সাধনার পরেও অনেক ক্ষেত্রে লাভ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। (ভূমিকা, পুরনূর দুআয়েঁ, মুফতী তকী উসমানী) এ কারণে উলামায়ে কেরাম এই দোয়াগুলো সংকলনে অসংখ্য পুস্তিকা রচনা করেছেন। যেন স্বল্প সময়ে তা মুখস্থ করা যায় অথবা প্রয়োজনীয় সময়ে পুস্তিকা থেকে পড়ে উপকৃত হওয়া যায়। এক্ষেত্রে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. রচিত ‘মুনাজাতে মাকবুল’ পুস্তিকাটি সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। পুস্তিকাটির বাংলা অনুবাদও প্রকাশিত হয়েছে। পুস্তিকাটি মূলত একটি সংকলন। পবিত্র কুরআন ও হাদীস থেকে বিক্ষিপ্ত দোয়াগুলোকে তিনি একত্রে জমা করে দিয়েছেন।

পছন্দের আরো পোস্ট