তুরস্কে একুশে উদযাপনের অনুভূতি

image001২১ ফেব্রুয়ারি। বাঙালী জাতির প্রাণ। বছর ঘুরে এই একটি দিন কোটি কোটি বাঙালীকে ডেকে ডেকে যেন নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয় আমরা বাঙালী। আমরা ঘুমিয়ে থাকবার নই। হাজারো বাঙালীর শহীদ মিনারে সম্মিলন বিশ্বকে জানান দেয় এ জাতি অকৃতজ্ঞ নয়। মাতৃভাষাকে রক্ষায় বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়া জাতির নাম বাঙালী। আর বাঙালী জাতির অস্তিত্তের নাম বাঙলা ভাষা। প্রতি বছর একুশের প্রথম প্রহর থেকে শুরু হয় এই বাঙলা ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী রফিক, সালাম, জব্বার,বরকতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন আার তা চলে সন্ধা অবধি।

 

বিশ্বের যেখানে যেদেশেই বাঙালী আছে, ছুটে আসে বাঙালী সম্মেলনে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস শহীদের স্মরণ অনুষ্ঠান অায়োজন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাস আংকারার মিল্লিকতুফানে কনফারেন্সেস হলে আয়োজন করে এক বিশাল স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। স্থানীয় সময় বিকাল ৫ টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের নব রাষ্ট্রদূত এম.এ.আল্লামা সিদ্দীকি সহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি তাদের সমবেদনা প্রকাশ করেন।

 

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বিদেশের মাটিতে বাঙাঙলীর প্রাণ বাংলা ভাষায় সঙ্গীত পরিবেশন ক্ষণিকের জন্য উপস্থিত সবাইকে আবেগে আপ্লুত করে তোলে।সমস্বরে সবায় গেয়ে ওঠে…….
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি……।”

 

001অনুষ্ঠানে আংকারাস্থ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রায় সব বাঙালী ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। ২১ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠান বড় পরিসরে উদযাপন হওয়ায় এখানে ইচ্ছামত মেহমান দাওয়াত করার সুযোগ ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার সব বন্ধু বান্ধবীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ৩ জন শিক্ষককেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম এবং তারা সাড়া দিয়েছেন।
সব মিলে অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে শিক্ষক,বন্ধু-বান্ধবী একসাথে মিলে বাঙালী খাবার খাওয়া।
যেন মায়ের হাতে রান্না করা চিরচেনা সেই খাবার খাওয়া। সত্যি অসাধারণ এক মুহূর্ত।

 

Post MIddle

যাহোক, বিদেশের মাটিতে থাকায় দেশীয় কাছের বন্ধুকে অনেক মিস করেছি বিশেষ এই ক্ষণে।ফলে বাস্তবতার কারণেই ২১ ফেব্রুআরি উদযাপনে এবার ছিল ভিন্ন স্বাদ।ছিল কিছুটা শৃূন্যতাও।যা বিদেশের মাটিতে কখনো পূর্ণ হবার নয়।অার তখনই মনে পড়ে যায় আমার দেশ,আমার মাতৃভাষাআনমনে গেয়ে উঠি অতুল প্রসাদ সেনের সেই লাইনগুলি……….

“মোদের গর্ব মোদের আশা,
আমরি বাঙলা ভাষা।’

 

 

Ehteshamul Haque, Masters,International Relation, Yildirim Beyazit Universuty,Ankara,Turkey.

 

লেখাপড়া২৪.কম/আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট