‘আমার বাবাই আমার অনুপ্রেরণা’
বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ আর নব্বইয়ের আন্দোলনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অবদানের কথা আমাদের অজানা নয়।এসব আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল অসামান্য। সেই দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পতাকা তলে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক ত্যাগী নেতা ইনাম আহমেদ। ইনাম আহমেদের ক্যারিয়ার ও ছাত্র রাজনীতির আদ্যপান্ত জানাচ্ছেন লেখাপড়া২৪.কমের বাকৃবি প্রতিনিধি মো. আব্দুর রহমান…
পুরো নাম ইনাম আহমেদ। পিতা মোখলেসুর রহমান ও মাতা মনোয়ারা রহমান এর অতি আদরের সন্তান ইনাম। ইনামের জন্ম ১৯৯১ সালের ১৬ অক্টোবর বগুড়ার ধনুট উপজেলায়। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের প্রবেশদার ঐতিহ্যবাহি প্রাচীন জনপদ বগুড়া শহরের আনাচে কানাচে দূরন্তপনা আর ছুটাছুটির মধ্যে কেটেছে ইনামের বাল্যকাল। ২০০৮ সালে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী স্কুল বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১০ সালে এইচএসসি পাশ করে ২০১১ সালে ভর্তি হন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কৃষি শিক্ষার সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকে জড়িয়ে যান ঐতিহ্যবাহি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ছাত্ররাজনীতির সাথে। ৫ বছরের অনার্স জীবনের প্রতি বছরেই নির্বাচিত শ্রেণী প্রতিনিধি ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি ছাত্র সমিতির সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন থেকেই ছাত্রসমিতির সকল পেশাগত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী ইনাম আহমেদ বর্তমানে ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ ভেটেরিনারি ছাত্র ফেডারেশনের (বিভিএসএফ সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
ছাত্র সমিতির সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ, করেছেন নানা দাবীর বাস্তবায়ন। ইনামের সুযোগ্য নেতৃত্বে বেশ কয়েক বছর ধরে বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস জাকজমক পূর্ণভাবে উৎযাপন করেছে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের নতুন শিক্ষাসফর বাস্তবায়ন করা, আন্তঃঅনুষদ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মত মেয়েদের অংশগ্রহণ, পুরস্কার বিতরণী ও যাকজমকপূর্ণ ভাবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হবার পেছনে রেখেছিলেন অসামান্য অবদান।

সর্বশেষ, পাঠ্যপুস্তক থেকে অর্জিত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবী পাশের দেশ ভারতে ইন্টার্নশিপ বাস্তবায়ন করেছেন। ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার মহান ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলা এই ছাত্রনেতা আগামীতে প্রানিসম্পদের অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়ন ও ছাত্র-শিক্ষকদের সম্পকের সমন্বয় ঘটিয়ে বেশি বেশি চাকুরিক্ষেত্র তৈরি ও ভেটেরিনারি অনুষদককে একটি মর্যাদাপূর্ণ অনুষদে পরিণত করতে সর্বদা তৎপর রয়েছেন।
বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও শহীদ নাজমুল আহসান হল ইউনিটের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্ররাজনীতের যেমন ছিলেন সক্রিয় তেমনি ত্যাগী। স্বচ্ছ, পরিস্কার রাজনীতির মাধ্যমে ছাত্রলীগের ঐতিহ্য ধরে রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলা এই ছাত্রনেতা বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী।
ছাত্র রাজনীতিতে আসার পিছনে কার অবদান রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইনাম আহমেদ জানান,প্রথম যেদিন মায়ের মুখে বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষনের কথা শুনেছিলাম সেইদিন থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি অন্য রকম একটা শ্রদ্ধা ও ভালবাসা কাজ করত। আমি সবসময় আমার পিতাকে অনুসরণ করি। কারন আমি মনে করি তিনি একজন সফল মানুষ। ব্যক্তিজীবনে তিনি একাধারে সমাজকর্মী, শিক্ষানুরাগী ও সকলের শ্রদ্ধা আর ভালবাসার পাত্র ছিলেন। আমার বাবাই আমার অনুপেরণা। মূলত আমার বাবা নেতৃত্ব দেওয়াটা পছন্দ করতেন। তিনি অনেক সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে সকল বাবা-মা সন্তানদের বলে দেন, বাবা রাজনীতিতে জড়াবি না। দেশের রাজনীতি ভালো না, নানা রকম বিপদ আপদ হতে পারে। কিন্তু আমার পরিবার থেকে সেরকম কোন ধরাবাধাঁ না থাকায় ছাত্র রাজনীতিতে আসতে পিছুপা হয়নি।
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইনাম আহমেদ বলেন,দেশের ঐহিত্যবাহী ছাত্রসংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যথেষ্ট ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। অতীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল অসাধারণ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেই চিরায়াত ঐতিহ্য আর সুনাম ধরে রাখতে চাই। সেইসাথে আল্লাহ যদি সহায় হন তবে ভবিষ্যতে মানুষের সেবা করার মধ্য দিয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করতে চাই। ইনাম আহমেদ অবসরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর টিভি কিংবা সংবাদপত্রে খবর পড়তে ভালবাসেন।#
লেখাপড়া২৪.কম/আরএইচ