রাবি অর্থনীতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী শুরু
নানা আয়োজন-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী ও বিভাগীয় এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ২য় দ্বি-বার্ষিক সম্মিলন শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। এদিন বিকেলে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে পতাকা উত্তোলন ও স্মারক ফেস্টুন উড়িয়ে দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, বিশিষ্ট চিন্তক-অর্থনীতিবিদ সনৎকুমার সাহা, প্রথিতযশা অর্থনীতি গবেষক ড. মোস্তফা কামাল মুজেরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর এম রফিকুল ইসলাম এবং এসোসিয়েশন পরিচিতি ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. সুলতান আহমদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. আতিউর রহমান বলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। দীর্ঘ ছয় দশক ধরে এই বিভাগটি দেশে অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় গৌরবময় ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানকার অনেক শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই বিভাগের যারা প্রতিভা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে সমাজ ও জাতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আজকের শিক্ষার্থীরাও পূর্বসূরীদের মত জাতিকে নেতৃত্ব দিবে সেই আস্থা ব্যক্ত করেন।
ড. আতিউর আরো বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের পেছনে স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ছিল অর্থনৈতিক ও সামাজিক শোষণ থেকে মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার ও আত্মনির্ভরশীলতার অঙ্গিকার। মূলত পাকিস্তানের দুই অংশের চরম আর্থসামাজিক বৈষম্যের কারণেও বেগবান হয়েছিল এদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীন বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয় আলো-আধারের মধ্য দিয়ে। আলোর দিকটি ছিল বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরাধীনতা থেকে মুক্তির অদম্য আকাক্সক্ষা। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের মাধ্যমে সেটি পূরণ হয়। আর আধারের দিকটি ছিল বাংলাদেশকে একটি দারিদ্রপীড়িত ও ভঙ্গুর অর্থনীতির হাল ধরতে হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়চেতা নেতৃত্বে শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে জাতি এগিয়ে যায় তার কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে। উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে চলেছে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আর তাহলেই প্রশস্ত ও মসৃণ হবে লাখো শহীদের স্বপ্নমাখা ও জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ অর্জনের পথ। আর বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ অবশ্যই অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে- তিনি এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দকে বিভাগের হীরক জয়ন্তী ও সম্মিলন স্মারক উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিভাগের শিক্ষক যিনাতুল ইসলাম।
সম্মিলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সকালে অর্থনীতি বিভাগের সামনে থেকে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৯:৩০ মিনিটে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক অধিবেশন। এ অধিবেশনে এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের প্রতিবেদন উপস্থাপন ও আলোচনা করা হয়। এছাড়া এসোসিয়েশনের নতুন কমিটিও গঠিত হয়।
সম্মিলনের দ্বিতীয় দিনে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে একটি একাডেমিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর প্রাক্তন মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল মুজেরীর সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এ এন কে নোমান। এছাড়া শোভাযাত্রা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও কর্মসূচিতে আছে।##
লেখাপড়া২৪.কম/রাবি/এমএইচ-৪৭৩