ঢাবিতে দেব স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত

20-01-16 Pressঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গোবিন্দ দেব দর্শন কেন্দ্র’র উদ্যোগে ‘দেব স্মারক বক্তৃতা-২০১৫’ আজ (২০ জানুয়ারি ২০১৬) বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

 

অনুষ্ঠানে Rabindranath Tagore at the Intersection of Nationalism and Modernity শীর্ষক ‘দেব স্মারক বক্তৃতা’ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম। রবীন্দ্রনাথের জাতীয়তাবাদের চেতনা এবং আধুনিকতার প্রকাশকে তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিশেষত ইংরেজি গীতাঞ্জলি পরবর্তী নান্দনিক বিবেচনাবোধ থেকে গবেষকের দৃষ্টিতে আলোচনা করেছেন অধ্যাপক ফকরুল আলম। তিনি বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ পাশ্চাত্য জাতীয়তা কিংবা আধুনিকতা প্রত্যক্ষ করেছেন কিন্তু স্বীয় ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতিকে ধারণ করে দেশাত্মবোধ আর মানবিকতার সংশ্লেষে তাঁর চেতনায় ও কথা-সাহিত্য, নাটকে প্রকাশ করেছেন নিজের অভিব্যক্তি।

 

প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন তাঁর আলোচনায় বলেন, রবীন্দ্রনাথের এক বছরের অর্থাৎ ১৯১৬ সালের সৃষ্টিকর্মের উপর ভিত্তি করে রচিত এই আলোচনা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই আলোচনা থেকে আমি আলোকিত হয়েছি। শিক্ষার্থীরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারবে।

 

Post MIddle

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অধ্যাপক গোবিন্দ দেবের আত্মাহুতি আমাদের প্রেরণা সৃষ্টি করে। উত্তাল অগ্নিঝরা মার্চ মাসে তিনি যুক্তরাজ্য থেকে ফুলব্রাইট ফেলোশীপ বাদ দিয়ে দেশের ডাকে ফিরে আসেন নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, নিজ সন্তানদের কাছে। তার গন্তব্য ধন-সম্পদ নয়, তার গন্তব্য ছিল মানবতা, মানবমুক্তি। এই চেতনা ধারণ করতেন বরীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ শুধু একজন সাহিত্যিক ও দার্শনিক ছিলেন না, তিনি শিক্ষা সংস্কারকও ছিলেন। মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানোকেই শিক্ষার মূল লক্ষ্য বলে তিনি চিহ্নিত করেছিলেন। উপাচার্য সমবেত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্ররা ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য, ১৯৭১-এ দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। এর পেছনে ছিল মনুষ্যত্ব, সত্যের জন্য ত্যাগের দৃষ্টান্ত।

 

তাই সত্যের জন্য, মানবিকতার আদর্শে গড়ে উঠতে হবে। স্মারক বক্তৃতার সূত্র ধরে উপাচার্য আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত আধুনিক ছিলেন। পাশ্চাত্যের আধুনিকতার অন্ধ অনুসরণ নয়, সে আধুনিকতা দেশের বাস্তবতায়, দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মানবিকতার মূল্যবোধ সৃষ্টি করেছিলেন। আধুনিকভাবেই তিনি জীবনযাপন করেছেন। আজকের প্রবন্ধের মূল বক্তব্যের আলোকে আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি করে মানবতাবোধ নিয়েই আধুনিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, দেশকে গড়ে তুলতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাংলাদেশের জনগণ মানবতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে দরকার রবীন্দ্রনাথের চেতনাসম্পন্ন আধুনিক মানুষ, মানবিকতাসম্পন্ন মানুষ।

 

সভাপতির বক্তব্যে প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক লতিফা বেগম।

 

 

পছন্দের আরো পোস্ট