ঢাবি অধ্যাপক ড. রবীন্দ্র বিজয় বড়ুয়া স্মারক বক্তৃতা

19-1-2016ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে আজ (১৯ জানুয়ারি) মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে “অধ্যাপক ড. রবীন্দ্র বিজয় বড়–য়া তৃতীয় স্মারক বক্তৃতা-২০১৪” অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগের চেয়ারপার্সন ও অধ্যাপক ড. রবীন্দ্র বিজয় বড়–য়া তৃতীয় স্মারক বক্তৃতা’র সভাপতি অধ্যাপক ড. বেলু রানী বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

 

বক্তৃতানুষ্ঠানে “পশ্চিমের লেখক-শিল্পীদের ওপর বৌদ্ধধর্ম ও দর্শনের প্রভাব” শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এবং আলোচক হিসেবে রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব জনাব সম্পদ বড়–য়া উপস্থিত ছিলেন।

 

অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন চর্চার এক অনালোকিত দিক উন্মোচন করে বৌদ্ধের অহিংস মানবতাবাদী আদর্শকে আজকের প্রাসঙ্গিকতায় উপস্থাপন করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধের চিন্তা ধারণ ও অনুসরণের আহ্বান জানান। তিনি এই সময়ে সহিংস এবং বিভেদকামী বিশ্বে বৌদ্ধধর্মের বাণীর গুরুত্ব ও বিশ্বব্যাপী এর চর্চা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ বিবরণ তুলে ধরেন।

 

Post MIddle

প্রধান আলোচক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, এই অস্বস্তি ও অশান্তির বিশেস্ব বিদ্যমান বৌদ্ধ দর্শন বিকল্প শান্তির সন্ধানে এক নির্দেশনা রেখে গেছে। একসময়ে অস্থির পাশ্চাত্য তা গ্রহণ করেছে। বিশ্বে শিল্প এবং সাহিত্যে বৌদ্ধ-চিন্তার বিষয়টি মনজুরুল ইসলাম পান্ডিত্যের সাথে ব্যাখ্যা করেছেন। এই বক্তৃতা আয়োজনের দ্বারা জ্ঞান সাধনায় ব্রতী রবীন্দ্র বিজয় বড়–য়ার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, রবীন্দ্র বিজয় বড়ুয়া যে চিন্তা রেখে গেছেন- সে চিন্তার সূত্র ধরেই আজকের এই স্মারক বক্তৃতা। আজকে ধর্মের নামে বিশ্বব্যাপী চলছে অস্থিরতা ও সংঘাত, ধর্মে ধর্মে চলছে সংঘাত এমনকি একই ধর্মের মাঝেও বিরাজ করছে অন্তর্ঘাত, আন্তসংঘাত। এই বিভৎসতার মধ্যে পৃথিবী এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে চলেছে সমাজ। এ বাস্তবতায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রাসঙ্গিকতাকে এই স্মারক বক্তৃতার মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। পূর্ব-পশ্চিমে আজ মানবতার সংকট। কোথায় মানবতা- এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এই ভাবনার যোগসূত্র দিয়েছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। উপাচার্য আরও বলেন, মহামানবরা মানুষে মানুষে সম্পর্কের কথা বলেছেন, মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেছেন।

 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনও ছিল মানুষকে ভালোবাসার দর্শন। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আমাদের বাংলাদেশ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন মানুষকে দেশ গড়ার স্বপ্ন। আজ তাই শিক্ষকদের সে আদর্শ ধারণ করে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিতে হবে সুশিক্ষা। মানবতার শিক্ষা নিয়ে শান্তির পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে, গড়ে তুলবে হবে নিজের দেশকে। হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্যের অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে লালন করে সমাজ ও সংস্কৃতিতে তা ছড়িয়ে দিতে হবে। রক্ষা করতে হবে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি। উপাচার্য ট্রাস্ট গঠন করার জন্য প্রয়াত অধ্যাপক ড. রবীন্দ্র বিজয় বড়–য়ার পরিবারকে ধন্যবাদ জানান।

 

লেখাপড়া২৪.কম/ঢাবি/পিআর/এমএএ-০৬৮৮

পছন্দের আরো পোস্ট