তুরস্কের শরণার্থী শিবির : মানবাধিকার রক্ষার অনন্য উদাহরণ

JPEG Pro

সিরিয়ায় সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অাজ অবধি ২০ লক্ষাধিক সিরিয়ান শরণার্থী তুরস্কে অাশ্রয় নিয়েছে, যার একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় শিশু। সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তবর্তী আকসাকালে অঞ্চলে এসব অসহায় শিশুদের নিয়ে গড়ে উঠা একটি সংগঠন “চিল্ড্রেন এ্যাসেম্বলী” যা শিশুদের মানসিক বিকাশের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সহমর্মিতা, মানবিক মূল্যবোধের মত অপরিহার্য শিক্ষার বিস্তারে অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে। প্রায় ১০০ শিশু সদস্যের এ সংগঠন অপর প্রায়১১,০০০ শিশুর বাসস্থানের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেছে।

 

শরণার্থী শিবিরের কয়েকজন কর্মকর্তা শিশুদের এসব কাজে সমন্বয় করে থাকেন। সপ্তাহে অন্তত একদিন এ এ্যাসেম্বলির সিটিং হয়ে থাকে যেখানে শিশুরা ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের যাবতীয় অভিযোগ, দাবি-দাওয়া পেশ করে থাকে। শিশু স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্য থেকেই এ সংগঠনের সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকে যা শিশুকালেই তাদের মধ্যে এক গণতানতরিক চেতনার জন্ম দিচ্ছে।

 

এছাড়া তুরস্কের সরকারি দুর্যোগ ও জরুরী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ(অাফাদ) ২৫টি শিবির পরিচালনা করছে শরণার্থীদের জন্য। এদের মধ্যে অাকসাকালে ক্যাম্প প্রথম যার অধীনে “যুব ও মহিলা এ্যাসেম্বলী” নামক আরেকটি সংগঠন রয়েছে যেটি শিবিরে বসবাসকারীদের জীবনের ক্লান্তি, একগুয়েমী দূর করতে নিয়মিত সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিশুরা আরবী ও তুর্কি ভাষায় সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকে। এছাড়া মাঝে মাঝে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকে যা কিছু সময়ের জন্য হলেও তাদের ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অানন্দের সঞ্চার করে থাকে।

 

Post MIddle

যাহোক, যুদ্ধ এখন আর সিরিয়ার দুই পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমেরিকা, ইসরাইল, রাশিয়া সহ শক্তিশালী প্রায় সব রাষ্ট্রই নিজেদের স্বার্থে সিরিয়ার কোন না কোন পক্ষকে সমর্থন করে যাচ্ছে অার তার বলি হচ্ছে নিরীহ সাধারণ জনগণ। জীবনের চরম বাস্তবতা বোঝার জন্য অাসলে বর্তমান সময়ে সিরীয় শরণার্থীদের দিকে তাকানোই যথেষ্ঠ বলে মনে করি। এমন দুৃর্বিষহ সময়ে তুরস্ক তাদের সহযোগিতার হাত সর্বোচ্চ প্রসারিত করেছে।

 

এছাড়া যেসব বেসরকারি সংগঠন শরণার্থীদের সহযোগিতা করছে তাদের মধ্যে সবচে এগিয়ে আছে ” হিউম্যানিটারিয়ান রিলিফ ফাউন্ডেশন(ইহাহা)” যেটি “মাভে মারমারা”নামক একটি জাহাজে করে ফিলিস্তিনে ত্রাণ পাঠিয়েছিল। যুদ্ধ কবলিত এমন কঠিন সময় গুলোতে সাহায্যের হাত বাড়ানো, মানুষকে একটু মানসিক প্রশান্তি প্রদানের মধ্য দিয়ে তুরস্ক সত্যিকার অর্থেই মানবাধিকার রক্ষার অনন্য নজির উপস্থাপন করেছে।#

 

লেখক: তুরস্ক প্রবাসী বাংলাদেশী শিক্ষার্থী

EhteshamulHaque: student, Masters, International Relation,  YildirimBeyazit university, Ankara, Turkey.

 

লেখাপড়া২৪.কম/এমএইচ-৪৭২

পছন্দের আরো পোস্ট