কুবির শিক্ষকদের আন্দোলনে হতাশায় শিক্ষার্থীরা

CUঅষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে শিক্ষকদের অবনমনের প্রতিকার ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কর্মবিরতিতে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এতে সেশন জটের আশঙ্কায় রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।

 

সূত্র জানায়, অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ ও অন্যান্য অসঙ্গতি দূরীকরণের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনের অংশ হিসেবে আন্দোলনে নামে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষাসহ অন্যন্য পরীক্ষা এবং ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ১৫টি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায় এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এ সপ্তাহে আর পরীক্ষা হবে কিনা এ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় শিক্ষক সমিতিকে পরীক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্তে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, শিক্ষকদের আন্দোলন যৌক্তিক তবে পূর্ব ঘোষিত চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হওয়া খুবই প্রয়োজন।

 

শিক্ষার্থীদের অনুরোধ ও তাদের শিক্ষাজীবন রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে কর্মবিরতি চলার সময়ে কেবল সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাসমূহ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিসহ নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকেও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাসমূহ আন্দোলনের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

 

একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘এমনিতেই সেশন জটে পড়ে রয়েছি । আর এখন শিক্ষকদের এই আন্দোলনের কারণে জটের শঙ্কা আরও বেড়ে যাচ্ছে। শিক্ষকদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা অবশ্যই রয়েছে, তবে ফাইনাল পরীক্ষাগুলো আন্দোলনের আওতামুক্ত থাকলে সেশন জটের শঙ্কা কিছুটা হলেও কমে যেত।’

 

Post MIddle

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার সোনিয়া বলেন, ‘চতুর্থ বর্ষের শেষ পর্বের পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, কিন্তু ১টি পরীক্ষা হওয়ার পরই আন্দোলনের কারণে অন্য পরীক্ষাগুলো স্থগিত হয়ে যায়। এ মাসে আমার স্নাতক শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আর সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকদের অনুরোধ করবো অন্তত ফাইনাল পরীক্ষাগুলো আন্দোলনের আওতামুক্ত করা হোক।’

 

তবে পরীক্ষাগুলো আন্দোলনের আওতামুক্ত না করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, ‘আমরা চাই ক্লাসরুমে ফিরে যেতে। সে ক্ষেত্রে সরকারকে আমাদের দাবির ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের পরীক্ষার পাশাপাশি ক্লাস বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।’

 

উলে­খ্য, গত ৩ জানুয়ারি একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করেন। ৭ জানুয়ারি স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এরপর ১১ জানুয়ারি থেকে তারা লাগাতার কর্মবিরতি শুর“ করেছেন।

 

লেখাপড়া২৪.কম/কুবি/রাসেল/এমএএ-০৬৭৪

পছন্দের আরো পোস্ট