ইবি শিক্ষার্থী জিকুর বিস্ময়কর আবিস্কার
ফ্যান, ফ্রিজ, টিভি, সেচ পাম্প এমনকি ভারী যেকোন ইলেক্টনিক্স মেশিন ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কেমন হবে? পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে যেকোন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র। আর এমনই এক অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার করে সাড়া জাড়িয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেধাবী ছাত্র মোঃ মাহাবুল হাসান জিকু।
জিকু জানায়, আবিষ্কৃত এ যন্ত্রটি সম্পূর্ণ মোবাইলের সীমকার্ডের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যেখানে অন/অফ সহ যেকোন কমান্ড লিখে এসএমএস করতে হবে জিএসএম মডিউলের সাথে সংযুক্ত সিম এর নম্বরটিতে। ওই এসএমএস এর মাধ্যমেই ইলেক্ট্রনিক্স ও ইলেক্ট্রিকাল ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ ও চালু হবে। একই সাথে যন্ত্রটিতে এমন ভাবে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে যেখানে বন্ধ ও চালু হওয়া ডিভাইসটির সাথে আবিষ্কৃত যন্ত্রটির জিএসএম মডিউল, ট্রানজিস্টরের মাধ্যমে রিলেটিও সুইচিং করবে। এতে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে ওই সিম নম্বরে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক্স ও ইলেক্ট্রিকাল ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে জানান মাহাবুল হাসান জিকু।
মাহাবুল হাসান আরো জানান, যন্ত্রটি দিয়ে বাসাবাড়ির লাইট, ফ্যান, এসি, রেফ্রিজারেটর, মাঠের ইলেক্ট্রনিক পাম্পসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই যন্ত্র দিয়ে ১৭টি ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
জানা যায়, মাহাবুল হাসান জিকু চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের মওলা বকসের ৩ সন্তানের মধ্যে সবার বড়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ, ইলেক্ট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। একই বিভাগের শিক্ষক খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ ৬ মাস কাজ করে এ যন্ত্রটি আবিষ্কার করেছে বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। অভিনব এই যন্ত্র আবিষ্কারের পেছনের প্রেরণা কি জানতে চাইলে জিকু বলেন-‘ছোট বেলায় অনেক ভোর রাতে যখন আমরা সবাই ঘুমিয়ে থাকতাম। তখন আমার দাদু মাঠে চলে যেতেন সেচ পাম্প চালু করতে। ওই সময় ভাবতাম আমরা সবাই শুয়ে আছি আর দাদু শীতের রাতে কষ্ট করে বের হয়ে যান পানির পাম্প চালানোর জন্য। এসব ভেবে খুব কষ্ট লাগতো। তখন থেকেই মুলত চিন্তা করতাম কিভাবে দূর থেকে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করা যায়। ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি একটা টান ছিল। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আমার আজকের এই কাজ।’
ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রুহুল আমিন ভুঁইয়া বলেন-‘ছেলেটি অনেক মেধাবী। সহযোগিতা পেলে গবেষণা ধর্মী কাজ ত্বরাণি¦ত করে দেশ ও জাতির কল্যাণে সে অবদান রাখতে পারবে বলে আমি মনেকরি। এছাড়া তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।’##
লেখাপড়া২৪.কম/ইবি/নবীন/এমএইচ-৪৫৩