শিক্ষকদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের কর্মসূচি
আজ (২৭ ডিসেম্বর) রবিবার সকাল ১১ টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের পেশাগত স্বার্থ সংরক্ষিত না হওয়ায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন এবং তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তেব্যে তিনি বলেন যে, আগামী ২ জানুয়ারি ২০১৬ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সভা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত হবে। অর্থমন্ত্রীকে দেওয়া পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হলে আগামী ২ জানুয়ারি কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা অবহিত হয়েছি যে, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য ইতোপূর্বে নির্দেশ দিয়েছেন। বেতন বৈষম্য দূরীকরণ-সংক্রান্ত কমিটিও শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া যৌক্তিক বলে স্বীকার করেছেন এবং নিষ্পত্তির জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক ছলচাতুরী ও শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড আজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিসমূহ পূরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে জাতীয় পত্র-পত্রিকায় অনুসন্ধিৎসু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরাও এই আমলাতান্ত্রিক বিচ্যুতির কথা স্বীকার করেছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে আটমাসব্যাপী এই নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলন আজ ধৈর্যচ্যুতির শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায়,
(১) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
(২) অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক তৈরি করা বিতর্কিত পরিপত্রটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করার অনুরোধ জানাচ্ছি এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই ধরনের পরিপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও শাস্তির আওতায় আনার আহবান জানাচ্ছি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়গণকে আমাদের প্রেরিত পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে আমরা বিনীত অনুরোধ করছি;
(৩) চলতি মাসের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অর্থমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য আহবান জানাচ্ছি;
(৪) জাতির জনকের সৃষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩-এ কোনো অশুভ হস্তক্ষেপ না করার অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্থান শ্রেণিকক্ষ; প্রাণশক্তি প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী। তাদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করে আমরা কঠোর আন্দোলনে ইতোপূর্বে যাইনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল আলাপ-আলোচনা ও প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আমাদের ন্যায্য দাবিসমূহ পূরণে সক্ষম হবো। কিন্তু বাস্তবে তা এখনও হয়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সকল আশা-আকক্সখার প্রতীক; শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণে বরাবরের মতো আমরা তাঁর দ্রুত হস্তক্ষেপ ও শুভাশিস কামনা করি।
লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দীর্ঘ ধারাবাহিক আন্দোলনের পর্যায় ও যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয় আর্থিক দিকের চেয়ে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা মর্যাদার বিষয়টিকেই বড় করে দেখছে। এসময় সমিতির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড মোঃ সারওয়ার জাহানসহ সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লেখাপড়া২৪.কম/খুবি/আলী/এমএএ-০৪৮৬