একাত্তরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা স্বরূপা বেগমকে সম্মাননা

24-12-15একাত্তরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা স্বরূপা বেগমকে আর্থিক অনুদান ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। সমাজকল্যাণমূলক বেসরকারি সংস্থা ‘মাটি’ এর উদ্যোগে আজ (২৪ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই সম্মাননা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করেন।

 

অনুষ্ঠানে ‘মাটি’র উপদেষ্টা লে. কর্ণেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীরপ্রতীক বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। ভাষাসৈনিক ড. জসীম উদ্দীন আহমেদ, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া সুমন, সাংবাদিক প্রভাষ আমিন এবং ‘মাটি’র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ‘মাটি’র চেয়ারম্যান বাশার খান।

 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা স্বরূপা বেগমকে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে আমরা আজ নিজেরাই সম্মানিত বোধ করছি। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বাঙালি জাতির ওপর বর্বর গণহত্যা চালায় এবং স্বরূপা বেগমের মত অসংখ্য নারীকে নির্যাতন করে। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা এখনও সেই নির্যাতনের চিহ্ন বহন করে চলেছেন।

 

Post MIddle

বাংলাদেশে গণহত্যা ও নির্যাতনের কথা অস্বীকার করায় কঠোর ভাষায় পাকিস্তানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতনের দায় অবশ্যই পাকিস্তানকে নিতে হবে। তিনি বলেন, সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ‘একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়নি’ পাকিস্তানের এই মিথ্যাচারের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপস করতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণেই গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক সভায় পাকিস্তানের সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ সকল সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করতেই বিএনপি-জামায়াত চক্র পাকিস্তানের সুরে কথা বলছে।

 

উল্লেখ্য, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা স্বরূপা বেগমের জন্ম। একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চে তিনি ১৩ বছরের কিশোরী ছিলেন। সে সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে চৌদ্দগ্রাম থানায় ধরে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধারের জন্য চৌদ্দগ্রাম ক্যাম্পে অভিযান চালান। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলাকালে সেদিন পাকিস্তানী বাহিনীর গুলিতে পা হারান স্বরূপা বেগম।

 

লেখাপড়া২৪.কম/ঢাবি/পিআর/এমএএ-০৪৬৮

পছন্দের আরো পোস্ট