চবি সান্ধ্য আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রক্টরকে স্মারকলিপি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সান্ধ্য আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে আবাসিক হলের ছাত্রীরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পযর্ন্ত কোন ধরনের সান্ধ্য আইন নেই বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের দায়িত্বরতরা। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর মো. হেলাল উদ্দিন এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষককারীরা উল্লেখ করেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে তাদের টিউশনি করতে হয়। আর তারা বেশিরভাগ টিউশনি করে থাকেন শহরে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম শহর ২২কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাতে ক্যাম্পাসে আসার এক মাত্র নিরাপদ মাধ্যম শাটল ট্রেন। আর এই ট্রেনটি রাত সাড়ে ৮ টায় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে আসে এবং তা রাত সাড়ে ৯ টা পৌঁছায়। এরপরেও মেয়েদের হলে যেতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। তাই অনেক ছাত্রী সন্ধ্যা ৭ টার আগে হলে প্রবেশ করতে পারে না। সন্ধ্যা ৭টা হলের প্রবশের নিয়ম বাদ দিয়ে হলে প্রবেশ করার শেষ সময় বাড়িয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত করার আবেদন জানায় শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ি আবসিক ছাত্রী হলের সকল শিক্ষার্থীদেরকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে হলে প্রবেশ করতে হয়। এরপরে প্রবেশ করলে নির্দিষ্ট খাতায় কোথায় এবং কি কাজে গিয়েছিল তা লিপিবদ্ধ করতে হয়। এদিকে ছাত্রীদের অভিযোগ, অনেক ছাত্রী চট্টগ্রাম শহরে টিউশনি, চাকুরির কোচিং শেষ করে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে হলে প্রবেশ করতে পারেন না। আর তাদেরকে হতে হয় প্রভোষ্ট ও কর্মচারীদের নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন।
মঙ্গলবার রাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের শ’খানেক ছাত্রীরা প্রভোষ্ট প্রফেসর ড. জরিন আখতার এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে, হলে প্রবেশের দেরী হলেই তিনি মেয়েদেরকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে অশোভন আচরণ করেন এবং বকাঝকা করেন।
তাছাড়া তিনি ছাত্রীদের অজান্তে স্ব স্ব বিভাগে শোকজ লেটার পাঠান। তা নিয়ে ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তার পদত্যাগ দাবি করেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গবার সন্ধা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করে খঅলেদা জিয়া হলে আবাসিক ছাত্রীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে তারা হলে ফিরে যায়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জেষ্ঠ্য শিক্ষকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
তারা জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের সান্ধ্য আইন নেই। তবে সন্ধ্যা ৭ টার পর মেয়েদের হলে জরূরী কাজ ছাড়া কেউ বের হলে অথবা প্রবেশ করতে চাইলে অবশ্যই সেই মেয়েকে নির্দিষ্ট খাতায় তা লিপিবদ্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই নিয়ম চালু রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চবি সহকারি প্রক্টর মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে ছাত্রীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা তাদের দাবিগুলো নিয়ে উপাচার্য মহোদয়কে জানাবো।
তবে ক্যাম্পাসে কোন সান্ধ্য আইন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, চবি ক্যাম্পাসে কোন সান্ধ্য আইন নেই। যেহেতেু মেয়েরা টিউশনি ও কোচিং ক্লাস করে থাকে সে বিষয়টি আমরা উচ্চ পর্যায়ে জানাবো।
লেখাপড়া২৪.কম/চবি/কাইয়ূম/এমএএ-০৪৬৭