অভিযোগ কমিটির বিরুদ্ধেই ‘অভিযোগ’!

রাবিরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নমূলক কার্যক্রম দমনের জন্য গঠিত সাত সদস্যের অভিযোগ কমিটিতে প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। সাত সদস্যের কমিটির বিরুদ্ধেও নীতিমালা বহির্ভূত শাস্তির সুপারিশসহ একাধিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও সঠিক বিচারের অভাবে কমিটির কাছে যাচ্ছেন না অনেকেই। এতে করে ক্যাম্পাসে দিন দিন যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েই চলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই।

 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সূত্র মতে, উচ্চ আদালতের রায়ের পর ২০১১ সালের ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩৭তম সিন্ডিকেট সভায়রাবিতে ‘যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা ২০১০’ অনুমোদন করে। নীতিমালা অনুযায়ী গঠিত দুই বছর মেয়াদের সাত সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিনের নীতিমালা অনুযায়ী সদস্য সচিব হওয়ার কোনো বিধান না থাকলেও বর্তমানে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে গত কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বিরুদ্ধেও। তিনি বর্তমানে কমিটির সভাপতি হয়েও নীতিমালা বিরুদ্ধ কাজ করছেন। এতে করে এই কমিটির বিচারকাজ কতোটা নিরপেক্ষ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নীতিমালা অনুযায়ী অভিযোগ কমিটি যৌন হয়রানির বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করে তার সুষ্ঠু সমাধান করার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টোটা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়ার পর নীতিমালা অনুযায়ী তদন্ত করে অনেকেই দোষী প্রমাণিত হলেও তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষককে নীতিমালা বহির্ভূত শাস্তির সুপারিশ করেছে অভিযোগ কমিটি।

 

নীতিমালা মানছে না কমিটি: বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও ২০১১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বিরোধ অভিযোগ কমিটি’র মাত্র কাছে ৮টি যৌন হয়রানির অভিযোগ এসেছে। কমিটির দেওয়া তথ্য মতে, ২০১১ সালে একটি, ২০১২ সালে একটি, ২০১৩ সালে দুটি, ২০১৪ সালে ৩টি এবং এ বছর অভিযোগ আসে একটি। এই আটটি যৌন হয়রানির অভিযোগের মধ্যে সাতটির তদন্ত কাজ শেষ নীতিমালা বহির্ভূত বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ করেছে অভিযোগ কমিটি। বর্তমানে একটি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।

 

অভিযোগ কমিটির কাছে আসা এই ৮টি অভিযোগের মধ্যে ৪টি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর শ্রেণী কক্ষে ছাত্রীদেরকে পতিতার সঙ্গে তুলনা করার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাওন উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগের ৮২ জন শিক্ষার্থী কমিটির কাছে অভিযোগ দেয়। নীতিমালার ৫.১ এর ‘ক’ উপধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীর নিজ নিজ পরিচয় প্রকাশের বিধান থাকলেও ওই শিক্ষককে তা জানতে দেওয়া হয়নি। নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অনুযায়ী অভিযোগ পাওয়ার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় এক বছর পর ২০১৩ সালের ৩ জুন চাকুরি থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করে অভিযোগ কমিটি। অথচ, ওই শিক্ষকের অভিযোগটি নীতিমালার ৩.১ এর ‘ক’ ধারার। নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারাঅনুযায়ী ৩.১ এর (ক), (খ),(গ), (ঘ), (ঙ) ও (চ) ধারায় যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো কমিটি নিষ্পত্তি করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দেবে। এই অপরাধে ওই শিক্ষককে চাকুরি থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করার এখতিয়ার অভিযোগ কমিটির ছিল না। তবে অভিযোগ কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর ২০১৩ সালে ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫০ তম সিন্ডিকেটের শাওন উদ্দিনকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

 

এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক শাওন উদ্দিন বলেন, অভিযোগ কমিটি নীতিমালা না মেনেই প্রথম থেকে আমার প্রতি অবিচার করেছে। তবে চাকুরি বহিস্কারের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রায়ের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছি।
২০১৪ সালের ১৯ অক্টোবর অভিযোগ কমিটির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৯ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে। তদন্ত করে এই অভিযোগটি ৩.১ এর ‘ট’ উপধারাঅপরাধ বলে প্রমাণ পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অভিযুক্ত সকল ছাত্রদেরকেশাস্তি না দিয়ে শুধু লিখিত সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ওই সুপারিশ নীতিমালা বহির্ভূত মনে করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটসদস্যরা তদন্ত কমিটির কাছে এর কারণ জানতে চেয়ে সঠিক সুপারিশ করতে বলে। পরবর্র্র্র্র্তীতে নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অমান্য করে গত ১৭ নভেম্বরদ্বিতীয় বার আবারও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের কাছে নতুন একটি সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশে ৯ জন ছাত্রের অপরাধ প্রমাণিত হলেও শুধুমাত্র দুইজন ছাত্রের এক বছরের জন্য বহিস্কারের সুপারিশ করা হয়। বাকী সাত ছাত্রকে নীতিমালা না মেনে বাঁচিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।গত ৩০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬২ তম সিন্ডিকেটে ওই সুপারিশ কার্যকর হয়।

 

শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের পতিতাদের সাথে তুলনা করায় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা আর ছাত্রীর বুকে স্পর্শ করাসহ অশ্লীল কথা বলার জন্য মাত্র এক বছরের জন্য বহিস্কার করা কোন নীতিমালায় আছে জানতে চাইলে অভিযোগ কমিটির সভাপতি মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, ‘কোন অপরাধের কি শাস্তি সেটা নীতিমালায় নেই। ফলে এটা কমিটিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কারো সাথেই আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। এই সুপারিশের সিদ্ধান্ত আমি নিজে নেইনি। কমিটি নিয়েছে।’

 

এদিকে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন বিভাগের প্রথম বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য এক ছাত্রী। ওই শিক্ষক মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানির চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন। অভিযোগটি নীতিমালার ৩.১ এর ‘গ’ উপধারার। নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অনুযায়ী ৩.১ এর ‘গ’ উপধারার অভিযোগগুলো কমিটি নিষ্পত্তি করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বরং এই অভিযোগেও নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অমান্য করে এ বছরের ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ওই শিক্ষককে চাকুরি থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করে অভিযোগ কমিটি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ কমিটি চাকুরিচ্যুতি করার সুপারিশ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬১তম সিন্ডিকেটে বিষয়টি ওঠার পর চার সদস্যের একটি রিফিউ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি বর্তমানে বিষয়টি আবারও তদন্ত করছে।

 

অডিও ক্লিপের কথোপকথনে কি ছিলো সেটা জানতে চাইলে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগেরবিভাগের অধ্যাপক মৃনাল কান্তি রায় বলেন, ওই ক্লিপে যে কথোপকথন ছিল তা বিভাগের একাডেমিক সভায় শোনানো হয়েছে। আমরা সেখানে কোথাও যৌন হয়রানি পর্যায়ে যেতে পারে তেমন কোনো কথা তাদের মধ্যে হয়নি।

 

তবে কামরুল হাসান মজুমদার বলেন, অভিযোগকারী ওই ছাত্রী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবে জানতে পেরে আমি যেনো তাকে পাশ করিয়ে দেই সেই জন্যে সে বার বার অনুরোধ করে। একইভাবে সে আমার কয়েকজন সহকর্মীকেও বলে। বিষয়টি অবৈধ হওয়ায় আমি রাজি হই না। তবে মেয়েটি যেনো ভেঙে না পাড়ে সে জন্য আমি তাকে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ফোনে কথা বলেছি। সেটা ছিল অবিভাবকসূলভ।

 

Post MIddle

এ বছরের ১০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র সুজন প্রামাণিক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র লিটনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন এক ছাত্রী। ওই ছাত্রীর অভিযোগটি নীতিমালার ৩.১ এর (খ) উপধারার। নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অনুযায়ী অভিযোগ কমিটি ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে সুপারিশ করার কথা থাকলেও দুই মাসেঅভিযুক্ত ও সাক্ষ্যদের পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নেয়নি। যা নীতিমালা বহির্ভূত। শুধু তাই নয়, নীতিমালার ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারায় অভিযোগ কমিটি তদন্ত করার জন্য পক্ষগণ ও সাক্ষীদেরকে রেজিস্ট্রার ডাকযোগে নোটিশ দেওয়ার কথা থাকলেও নীতিমালার ওই ধারাটিও সব ক্ষেত্রে অমান্য করে কমিটির সদস্যরা।

 

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অভিযোগ কমিটির সদস্যপদে দুইজনের অবৈধ দায়িত্বপালন: নীতিমালার ৫.২ এর ‘ঘ’ উপধারায় অভিযোগ কমিটি গঠনের বিষয়ে বলা হয়েছে। ওই উপধারায় এক নম্বরে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অধ্যাপক/সহযোগী অধ্যাপক পদ মর্যাদাসম্পন্ন তিনজন শিক্ষক; তন্মধ্যে দুইজন নারী সদস্য। এরপর পর্যায়ক্রমে সাত সদস্যের গঠনপ্রাণালী বর্ণনা করা হয়েছে। এই উপধারার শেষে আরও উল্লেখ বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন সদস্যের মধ্য থেকে কর্তৃপক্ষ একজন নারী সদস্যকে সভাপতি ও অন্য একজনকে (নারী/পূরষ) সদস্য সচিব হিসেবে মনোনয়ন দেবেন।

 

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর গত কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া কমিটিতে স্থান পেয়েছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সদস্য হিসেবে। রারির শিক্ষক হিসেবে নয়। তিনি বর্তমানে অভিযোগ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক তানজিমা ইয়াছমিনও কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সদস্য হিসেবে। নীতিমালা অনুযায়ী তাদের কেউই অভিযোগ কমিটির সদস্য সচিব হতে না পারলেও তারা দিব্বি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের অবৈধ দায়িত্বপালনকালে ৭টি অভিযোগের তদন্ত করে বিশ্বদ্যিালয়ের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

 

কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক তানজিমা ইয়াছমিনের কাছে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে তিনি কোনো মন্তব্য না করেই ফোন রেখে দেন। পরপর দুইদিন এই বিষয়টি জানতে চাইলেও তিনি একই আচরণ করেন।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ বলেন, ‘সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব নেওয়ারবিষয়গুলোআমরা এভাবে কখনও ভাবিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে আমাদের নাম প্রস্তাব করার পর আমরা এ দায়িত্ব পালন করছি।’

 

অভিযুক্তের শাস্তিতে অভিযোগ কমিটির সভাপতির বাড়তি আগ্রহ:অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদারকে যাতে দ্রুত চাকুরিচ্যুত করা হয় সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করার জন্য বিভিন্নভাবে বলেছেন মাহবুবা কানিজ কেয়া। যার একটি অডিও ক্লিপ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, আমি কোনো ছাত্র সংগঠনকে কামরুল হাসানের চাকুরিচ্যুতির জন্য ক্যাম্পাসে আন্দোলন করতে বলেছি বলে মনে নেই। অভিযোগ কমিটি কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে শুধু ঘটনাটি তদন্ত করেছে। এর সঙ্গে আমার বাড়তি কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

 

তদন্তাধীন বিষয়ে ছাত্র সংগঠনকে আন্দোলন করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নীপিড়ন বিরোধ অভিযোগ কমিটির সভাপতি কথোপকথনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘তিনি কখনই এসব করতে পারেন না। যদি এটা হয়ে থাকে আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো।’

 

নীতিমালা নিয়েও প্রশ্ন: নীতিমালা অনুযায়ী যৌন হয়রানির অপরাধ নির্ধারণ করা গেলেও কোন অপরাধে অভিযোগ কমিটি কি শাস্তির সুপারিশ করবে তা কোথাও নির্ধারণ করা হয়নি। নীতিমালাতে বিভিন্ন ধারায় যৌন হয়রানির সংজ্ঞা ও শাস্তির বিষয় আলাদাভাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে নীতিমালার ৩.১ এর (ক), (খ), (গ), (ঘ), (ঙ) ও (চ) উপধারার যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো ৫.৩ এর ‘খ’ উপধারা অনুযায়ীঅভিযোগ কমিটিকে নিষ্পত্তি করার কথা বলা হয়েছে।অন্য যৌন হয়রানির অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালায় নির্দিষ্ট কোনো শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়নি। এতে করে অভিযোগ কমিটির অনেকেই ব্যক্তিগত শক্রতা বা অন্য কোনো কারণে অভিযুক্তদের বিভিন্নভাবে নীতিমালা বহির্ভূত শাস্তির সুপারিশ করছে। তাই এই প্রতিষ্ঠান থেকে সঠিক বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে প্রতিদিন যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও অভিযোগ কমিটির কাছে কেউ বিচার নিয়ে যাচ্ছে না।

 

সামগ্রিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি নিয়ন্ত্রনের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধেও কিছু অভিযোগের কথা আমাদের কাছে এসেছে। বিষয়গুলো আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি।’#

 

 
লেখাপড়া২৪.কম/রাবি/তমাল/আরএইচ-৪৮৮০

পছন্দের আরো পোস্ট