খুলনা জিলা স্কুলে ২০ কোটি টাকার ভর্তি বাণিজ্য

খুলনা জিলা স্কুলে ৯ বছর ধরে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলেছে ভর্তি বাণিজ্য।

আর ১৫৫৮ জন অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করে চক্রটি কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ স্কুলেরই কয়েকজন শিক্ষক।
সাবেক প্রধান শিক্ষিকাসহ স্কুলের ৯ শিক্ষক ও কর্মচারী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও কয়েকজন সাবেক ছাত্র এই চক্রে রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। শিক্ষা বিভাগ এই অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে।
সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি ৪ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে একটি পত্র দিয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষিকা মালেকা বেগমের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন প্রকারের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন।
সহকারী শিক্ষক মো. আমানত আলী তদন্ত দলকে বলেছেন, স্কুলে বর্তমানে প্রতি শ্রেণীতে ১শ থেকে ১৩২ জন ছাত্র আছে। ২০১৩ সালে ছাত্রদের পরিচয়পত্র প্রদানের কথা বলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা নেয়া হয়েছে। কিন্তু পরিচয়পত্র দেয়া হয়নি। গত ১০ বছর ধরে বিদ্যালয়ের ম্যাগাজিন সবুজ বিকাশ প্রকাশিত হয় না। কিন্তু এ জন্য প্রতি বছরই ছাত্রদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়।

 

বদলি হওয়া প্রধান শিক্ষক মালেকা বেগমের দায়িত্বকালে ৯ বছরে অতিরিক্ত ১৫৫৮ ছাত্র ভর্তি করার মাধ্যমে খুলনা জিলা স্কুলে কমপক্ষে ২০ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার সহযোগী হিসেবে স্কুলের আরও ৮ শিক্ষক ও কর্মচারীর নাম রয়েছে।

 

Post MIddle

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব একেএম জাকির হোসেন ভূইয়া গত ৭ জুন খুলনা জিলা স্কুল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তিনি স্কুলের প্রতিটি শ্রেণীতে অতিরিক্ত ছাত্র দেখতে পান। পরে কাগজপত্র পর্যবেক্ষণে নিয়ম অমান্য করে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির প্রমাণ পান। তিনি মন্ত্রণালয়ে ফিরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তাতে উল্লেখ করেন, ভর্তি ক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেন হতে পারে। প্রতিবেদনে স্কুলটির আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। মালেকা বেগমের বিরুদ্ধে জরুরি বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

 

প্রতিবেদনটি জমা দেয়ার পরই মালেকা বেগমকে খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (মন্নুজান স্কুল) বদলি করা হয়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তিসহ আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে শিক্ষা অধিদফতর একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির কাছে স্কুলের ৯ শিক্ষক লিখিতভাবে ভর্তি বাণিজ্য ও স্কুল ফান্ডের লাখ লাখ টাকা আÍসাতের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেন। এসব কাজের জন্য তারা স্কুলের মালেকা বেগমকে দায়ী করেছেন।
নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত প্রত্যেক ছাত্র ভর্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মালেকা বেগম দাবি করেন, জিলা স্কুলে অভিভাবকদের প্রত্যাশার চাপ কুলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। কোনো প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতির মাধ্যমে কোনো ছাত্রকে তিনি ভর্তি করেননি।

 

EH

পছন্দের আরো পোস্ট