একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু: ছাপা হয়নি তিন বই
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ছাপা হয়নি তিন বই শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে গত ১ জুলাই থেকে। কিন্তু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এখনো উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি ও সহপাঠ বই প্রকাশ করতে পারেনি। এ সুযোগে এনসিটিবির নাম ব্যবহার করে একশ্রেণির অসাধু প্রকাশক ও ব্যবসায়ী নকল বই বাজারে ছেড়েছেন। সেই বই বিক্রিও হচ্ছে।
এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি ও সহপাঠ বই এনসিটিবি ছেপে বিক্রি করে। কিন্তু বোর্ড ওই তিনটি বই ছাপা শেষ করতে পারেনি। কয়েক বছর ধরে এমন সমস্যা হচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিকের অন্যান্য বই বেসরকারি পর্যায়ে ছাপিয়ে বিক্রি করা হয়।
এনসিটিবির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, এবার নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বই তিনটি ছাপা হচ্ছে। এগুলো এখনো বাজারে আসেনি। এখন নতুন শিক্ষাক্রমের বই বলে যেগুলো বিক্রি হচ্ছে তা নকল।
ওই কর্মকর্তা জানান, প্রক্রিয়াগত কারণে এবার দেরি হয়ে গেছে। বিশেষ করে সহপাঠ বইটি গত জুন মাসে অনুমোদিত হয়েছে। এরপর ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ ছাড়া আগে এনসিটিবি সরাসরি ছাপার কাজ করলেও এবার দরপত্র দিয়ে ছাপানো হচ্ছে। মুদ্রণকারীদের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। মোট ১৫টি প্যাকেজে এই তিনটি বইয়ের ১০ লাখ কপি করে ছাপার কাজ চলছে। ৯ আগস্টের মধ্যে ছেপে বই সরবরাহ করা হবে।
এনসিটিবির বই বাজারে না আসায় এ সুযোগে নকল বই ছেপে বিক্রি করছেন অসাধু প্রকাশক ও ব্যবসায়ীরা। বইয়ের দোকানে খোঁজ নিয়ে ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ায় তাঁরা যে বই পাচ্ছেন তা-ই কিনছেন। বিশেষ করে ইংরেজির বই। অসাধু ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতবারের বাংলা বই নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্যও প্রযোজ্য। তবে সহপাঠের বই কম নকল হচ্ছে।
নকল বইয়ের দাম আসল বইয়ের চেয়ে বেশি। যেমন, এনসিটিবির নতুন ইংরেজি বইয়ের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ টাকা। কিন্তু বাজারে ২০১৪ সালের সংস্করণ দাবি করে যে ইংরেজি বই বিক্রি হচ্ছে, সেটির গায়ে দাম লেখা ১৩০ টাকা। দরদাম করলে কমেও কেনা যাচ্ছে এই বই। অথচ এনসিটিবির বই বিক্রি হয় বইয়ে উল্লিখিত দামেই।
গত শনিবার রাজধানীর নীলক্ষেতে বাবুপুরা মার্কেটের একটি দোকানে ক্রেতা হিসেবে উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি বই চাইলে যে বই দেওয়া হয়, তাতে লেখা ছিল ‘রিপ্রিন্ট-২০১৪’। দাম লেখা ১৩০ টাকা। আরেকটি দোকানে গিয়ে উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা বই চাইলে দোকানি গত বছরের বই বের করে জানান, বইটি এই শিক্ষাবর্ষেও প্রযোজ্য। আরেকটি দোকানে গিয়েও একই কথা শোনা যায়। তিনি যে বইটি বের করেন, তাতে দাম লেখা ১১০ টাকা। কিন্তু এনসিটিবি এবার নতুন বাংলা বইয়ের দাম নির্ধারণ করেছে ১০২ টাকা। সহপাঠ বইয়ের নির্ধারিত দাম ৪৭ টাকা।
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বই ছাপতে দেরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তারা আশা করছেন, ঈদের পর ক্লাস শুরুর আগেই বই ছাপার কাজ শেষ হবে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আর কয়েকটা দিন অপেক্ষার পরামর্শ দিয়ে তিনি নকল বই না কেনার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
EH