ঈদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের খাবার বিড়ম্বনা

zzzaa8_31953আইডেনটিটি কার্ডের (পরিচয়পত্র) মেয়াদ না থাকলে ঈদের দিনও হলে থাকা ছাত্রদের খাবার খেতে দেয়া হয় না। শিক্ষকরা এসব ছাত্রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। প্রতিবছর ঈদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে এ রকম ঘটনা ঘটে।
ঈদের সময় অনেক ছাত্রই থেকে যান ক্যাম্পাসে। কেউ পরীক্ষার পড়াশোনার জন্য। কেউ আর্থিক সমস্যার কারণে। কারও থাকে ব্যক্তিগত নানা সমস্যা। আবার কেউ চাকরি না পাওয়ার লজ্জায় বাড়িতে না গিয়ে অনেকেই হলেই ঈদ করেন।
বিগত ঈদগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিটি আবাসিক হলে অন্তত ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী ঈদের সময় হলে থাকে। হল কর্তৃপক্ষ এসব শিক্ষার্থীদের ঈদের দিনের খাওয়ার ব্যবস্থা করে। কিন্তু যেসব ছাত্রদের কার্ডের মেয়াদ থাকে না তাদেরকে হয়রানির শিকার হতে হয়। শিক্ষকরাই ওইসব শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখায়। অনেক সময় তাদের খাবারও দেয়া হয় না।
জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও হলে ঈদ করছেন শিক্ষার্থীদের অনেকেই। কথা হল বঙ্গবন্ধু হলের মাস্টার্সের ছাত্র ফয়েজের সাথ। তিনি বিগত তিনটি ঈদে বাড়িতে যাননি।
ঈদে বাড়ি যাননি কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ঈদের সময় টিকেটের ঝামেলা। রাস্তা ঘাটের অবস্থা ভাল থাকেনা। তাছাড়া পরীক্ষার পড়াশোনা থাকে। ফয়েজ জানালেন, এবারও তার যাওয়া হবে না। কারণ ঈদের পর পরীক্ষা আছে।
প্রতি হলেই ঈদের সময় গরু জবাই করা হয়। বেশ খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়। গরুর, মাংস পোলাও, দই, কোল্ডড্রিংকসসহ আরো অনেক কিছু দেওয়া হয়। হলে ঈদের দিনগুলো বেশ ভালই কাটে বলে জানালেন এবার ঈদে হলে থাকবেন এমন কিছু শিক্ষার্থী।
এদিকে ঈদে হলে থাকা ছাত্রদেরও কষ্টও আছে। জিয়া হলের রাহাত নামে এক ছাত্র জানান, আগের ঈদগুলোতে হাড়ি ভরে রান্না করে হল মেসে দিয়ে যেত। যে যত পারে খেত। কিন্তু এখন আর তা হয়না। এখন পার্সেল করে দেয়া হয়। তাই খাওয়ার আনন্দটা কমে গেছে।
ঈদের আনন্দের বদলে দুঃখও পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। এমন অনেক ছাত্র আছেন যাদের কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন কার্ড বানানো হয়নি। তাদেরকে ঈদের দিন হল থেকে খাবার দেওয়া হয়না। তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন হলের হাউস টিউটররা এমনই অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু হলের এক ছাত্র বলেন, গত রমজানের ঈদের সময় আমার ভাতিজি মুমূর্ষু অবস্থা হাসপাতালে ছিল। তাই আমি বাড়িতে যেতে পারিনি। হলেই ছিলাম। আমার কার্ডের মেয়াদ ছিলনা। কিন্তু আমি হলের বৈধ ছাত্র ছিলাম। নতুন কার্ড বানানো হয়নি। তাই স্যাররা ঈদের দিন আমাকে খাবার দেননি। আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, এমন অনেক ছাত্রের সাথেই বাজে আচরণ করেন হলের হাউস টিউটররা। সব জায়গায়ই সাধারণ ছাত্ররা বলি হয়। হলের ছাত্রনেতারা তাদের বন্ধু-বান্ধবীদের জন্য স্যারদের কাছে খাবারের অর্ডার দিয়ে রাখে। যার কারণে সাধারণ ছাত্ররা খাবার পায়না।
এক ছাত্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু ঈদ এবং বিশেষ দিনগুলোতে কেন ছাত্রদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বছরের অন্য দিনগুলোতে স্যারেরা কি করে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. বায়তুল্লাহ কাদেরী বলেন, আমরা আইডি কার্ড চেক করি বহিরাগতদের চিহ্নিত করার জন্য। আমরা ছাত্রদের খাবার নিয়ে কখনও ঝামেলা করিনা।
স: ই্এইচ

পছন্দের আরো পোস্ট