এ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি অফ বাড হনেফ
এ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি অফ বাড হনেফ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে৷ ব্যবসা প্রশাসন এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়গুলোর জন্য পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ ১০টি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যাচেলর করার সুযোগ দিচ্ছে এ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি অফ বাড হনেফ৷ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ট্যুরিজম এ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট এবং অডিট এ্যান্ড ট্যাক্সেশন৷ মাস্টার্স করা যায় মাত্র দুটো বিষয় নিয়ে আর তা হল ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট এবং ট্রান্সপোর্ট এ্যান্ড লজিসটিক্স ম্যানেজমেন্ট৷
এই বিষয়গুলো ইংরেজি ভাষায় পড়ার সুযোগ দিচ্ছে এ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বাড হনেফ৷ এছাড়াও দুটি বিষয়ে শর্ট কোর্স করার সুযোগ দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ এভিয়েশন সার্টিফিকেট – এটি মাত্র ছয় মাসের কোর্স এবং হসপিটালিটি রিয়েল এস্টেট সার্টিফিকেট – এটিও ছয় মাস বা এক সেমেস্টারের কোর্স৷
উলরিশ ব্রেমার এ্যাপ্লায়েড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি অফ বাড হনেফে ভর্তির বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন৷ তিনি জানালেন এই মুহূর্তে ঠিক কতজন ছাত্র- ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে৷ ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের এখানে ৪৩টি দেশ থেকে ১১৬ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে৷ সব মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে প্রায় ১৬০০ ছাত্র-ছাত্রী৷ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্ত থেকেই আমরা ছাত্র-ছাত্রী পাচ্ছি, তাদের স্বাগত জানাচ্ছি”,জানালেন ব্রেমার৷
অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা প্রথমবারের মত দেশের বাইরে পা রাখে৷ বিদেশের মাটিতে নতুন সংস্কৃতি, নতুন ভাষা, রীতি, নীতি – এসব অনেককেই চমকে দেয়৷ যে সব ছাত্র-ছাত্রী প্রথমবারের মত জার্মানিতে আসে তাদের কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সাহায্য এবং সহযোগিতা করে? ব্রেমার বললেন,‘‘আমরা অনেক আগে থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করি৷ জার্মানিতে আসার আগে থেকেই এসব ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেয়া হয়৷ এর মধ্যে প্রথমেই থাকে জার্মানিকে চেনা এবং জানা৷ এরপর যখন তারা এখানে আসে তখন ইন্টারন্যাশনাল অফিস তাদের পুরো দায়িত্ব নেয়৷ এর মধ্যে ভিসা বাড়ানো, থাকা-খাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়া – সব কিছুই পড়ে৷”
যেসব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি নিয়ে পড়তে আসে না তাদের কীভাবে সাহায্য করা হয়? এ প্রশ্নের উত্তরে উলরিশ ব্রেমার জানান,‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বৃত্তি তহবিল আছে৷ সেখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনে সাহায্য করা হয়৷ এছাড়া জার্মানিতে যে সব বৃত্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের পরামর্শ দেয়া হয়, সে সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়৷
পড়াশোনা শেষে ইন্টার্নশিপ বা চাকরির সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে কেমন? সার্টিফিকেট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কী চাকরির খোঁজ করা যাবে না? এসবের জন্য চিন্তা করতে হবে না কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ই নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীর পরিচয় করিয়ে দেয়৷ ব্রেমারের ভাষ্য,‘‘হ্যাঁ, আমরা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা শেষে চাকরি বা ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দেই৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে একটি ‘ক্যারিয়ার সেন্টার’৷ সেই সেন্টারই পড়া শেষে বিভিন্ন চাকরি এবং ইন্টার্নশিপের নানা তথ্য ছাত্র-ছাত্রীদের জানায়৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির খুব ভাল যোগাযোগ আছে৷ তারাই প্রতি বছর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে৷ ঠিক কতজন এই মুহূর্তে তাদের প্রয়োজন – তা জানিয়ে দেয় আমাদের আগে থেকেই৷ আমরাও সেই অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করে দেই৷”
জার্মানিতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ই বছরে একবার ‘জব মেসে’র আয়োজন করে৷ এটা হল এক ধরণের চাকরির মেলা৷ বিভিন্ন কোম্পানি তাদের প্রতিনিধি পাঠায় ক্যাম্পাসে৷ সব মিলে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি কোম্পানি থেকে প্রতিনিধি আসে৷ তারা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে৷ জব মেসে প্রসঙ্গে ব্রেমার জানান,‘‘প্রায়ই বিভিন্ন কোম্পানি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসে৷ নিজেদের কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের জানায়, ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে পরিচিত হয়৷ এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরাও সরাসরি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পায়৷ এছাড়া বেশ কিছু কোম্পানি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করে – ছোটখাট প্রকল্পে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করে, এক সঙ্গে কাজ করে৷ খোলাখুলিভাবেই জানানো হয় কোন ধরণের কাজ তারা করে এবং কোন ধরণের প্রার্থী তারা চায়৷