রাবির রহমাতুন্নেসা হলে ভাঙচুর

images (1)হলের গণরুমের থাকার জন্য গেস্ট কার্ড ও হলের নানা মুখি অব্যস্থাপনার প্রতিকার না হওয়ায় ভাংচুর চালিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রহমাতুন্নেসা হলের ছাত্রীরা। মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে হলে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, হলে আবেদন করার দুই বছর পর হলেও গেষ্ট রুমে থাকা অনেককেই দেয়া হয়নি গেষ্ট কার্ড। গেস্ট কার্ড না থাকায় বিভিন্ন সময় হল প্রাধ্যক্ষ, হাউজ টিউটর ও হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সাথে খারাপ আচরণ করনে। কার্ডের জন্য বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো গত সোমবার সকালে হলের গণরুমে গেস্ট কার্ড ছাড়া অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে হল থেকে চলে যেতে বলেন প্রাধ্যক্ষ। ৮টার মধ্যে হল না ছাড়লে পুলিশ দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওই প্রাধ্যক্ষ। এসময় শিক্ষার্থীদের প্রাধ্যক্ষ কক্ষে ডেকে এনে খারাপ আচরণও করা হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই প্রাধ্যক্ষ হলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই হলে শুরু হয় অব্যবস্থাপনা। হলের কোনো কিছু নষ্ট হলে তা বারবার বলেও ঠিক করানো যায় না, রান্না ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি কেটে গেলেও চার দিনে তা ঠিক করা হয় না, হলে ২০১৩ সালের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০১৪ সালে করলেও তার পুরুস্কার বিতরণী এখনও করা হয়নি, হলের বর্জ্য নিয়মিত পরিস্কার করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না, এছাড়াও হলে বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবয়েলের সংকট থাকলেও তা বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি। এতে করে হলে একটি টিউবয়েল থাকার কারণে নানামুখি দূর্ভোগে পরতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করনে তারা।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, হলের প্রাধ্যক্ষ, হাউজ টিউটর ও হল প্রশাসনের কাছে কোনো বিষয় নিয়ে যাওয়া হলে তারা খারাপ আচরণ করে আমাদের তাড়িয়ে দেন। এছাড়াও হলের প্রধান গেট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তালা বদ্ধ করে রাখার কারণে হলে প্রবেশ করতে আমাদের অনেক সময় নষ্ট করতে হয়। হলের নেট ব্যবস্থা নিয়েও অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ করায় সোমবার রাতেই হলে বিক্ষোভ করে ছাত্রীরা। এর পরেও হল প্রাধ্যক্ষের কোন সাড়া না পাওয়ার কারণে হলের কয়েকটি ফুলের টব ভাঙচুর করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষর্থীরা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ সাবরিনা নাজ বলেন, হলের গেষ্ট কার্ড দেওয়া হয় তাদেরকেই যারা গরীব শিক্ষার্থী। তাই অনেকেই আবেদন করলেও আমরা সবারটা গ্রহণ করিনা।
হলে অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, রহমতুন্নেসা হলের বাজেট কম হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীদের চাহিদা মতো কাজ করতে পারছি না। তবে হল প্রশাসন সাধ্য মতো কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণের বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ জানান, হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করে এটা আমিও জানি। এ বিষয়ে তাদেরকে বারাবার সতর্ক করার পরেও তারা শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেই যাচ্ছে। তবে আমার সম্পর্কে যে অভিযোগ এসেছে তা ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা সাদেকুল আরেফিন মাতিন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষের একটি শিক্ষার্থী হলের গণরুমে অবস্থান করার পরও কেনো গেষ্ট কার্ড পাচ্ছে না আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি বলে জানান তিনি।

পছন্দের আরো পোস্ট