বিদেশী শিক্ষার্থী হারাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

imagesপ্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই শিক্ষানুরাগীদের কাছে উচ্চশিক্ষার তীর্থস্থান বিবেচিত। এ প্রাচীন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা প্রসারে অবদান শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, উপমহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে বহির্বিশ্বেও।

যুগের ধারাবাহিকতায় বহির্বিশ্বের অনেক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে এসেছেন। তবে বিগত বছরগুলোতে ঢাবিতে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভর্তি প্রক্রিয়ায় জটিলতা, বিদেশীদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ, ভিসা সংক্রান্ত জটিলতাসহ নানা কারণে ঢাবিতে ভর্তির ব্যাপারে বিদেশী শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সূত্র জানায়, ২০০০-২০০১ সেশনে ঢাবিতে মোট ২৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ২০০১-২০০২ সেশনে তা কমে দাঁড়ায় ২২ জনে। তাছাড়া ২০০২-২০০৩ সেশনে ১২ জন, ২০০৩-২০০৪ সেশনে নয় জন, ২০০৪-২০০৫ সেশনে পাঁচ জন, ২০০৫-২০০৬ সেশনে চার জন, ২০০৬-২০০৭ সেশনে আট জন, ২০০৭-২০০৮ সেশনে তিন জন, ২০০৮-২০০৯ সেশনে ছয় জন এবং ২০০৯-১০ সেশনে মাত্র দুজন ভর্তি হয়।
২০১০-১১ এবং ২০১১-১২ সেশনে কোনো বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হননি। তবে ২০১২-২০১৩ সেশনে মাত্র একজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন।
বিদেশী শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ঢাবির প্রথম ভিসি স্যার পি জে হার্টজের নামে একটি হল রয়েছে। এতে শুধু বিদেশী শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অনুমতি সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষক স্বপরিবারে এ হলে অবস্থান করছেন।

Post MIddle

বর্তমানে হলে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রুম ৬১টি, আসন সংখ্যা ১২২। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল, বারডেম, ডেন্টাল কলেজসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বিদেশী শিক্ষার্থী এবং তাদের গেস্টসহ ১৫০ শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করছেন— যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪।
এসব কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীরা সিট সঙ্কটে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

download (4)পি জে হার্টজ হলে অবস্থানরত অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নেপালের। বাকিরা চীন, ভারত ও অন্যান্য দেশের।
এদিকে ঢাবির ওয়েবসাইটে বিদেশি শিক্ষার্থীর ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নেই বলে একাধিক বিদেশী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন। ভর্তি কার্যক্রমেও জটিলতা রয়েছে বলে জানান তারা।
ঢাবিতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা শাখা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখাতেই চলছে এর কার্যক্রম।
একাধিক বিদেশী শিক্ষা শিক্ষার্থী ঢাবির শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আন্তর্জাতিকমানের শিক্ষা দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ ব্যাপারে স্যার পি জে হার্টজ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. লুত্ফর রহমান ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যাকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আখ্যা দেন। তার ভাষায়, ‘বিদেশীদের ভর্তি প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ। ফলে অনেকে ভর্তি হতে তেমন আগ্রহ দেখান না।’

তবে ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাবি অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে বলে দাবি করেন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও মেডিক্যাল শিক্ষার প্রতি ছাত্রদের আগ্রহকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

 

পছন্দের আরো পোস্ট