রাবিতে ইফতারের নামে চাঁদাবাজি

রমজানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ইফতার অনুষ্ঠানরে নামে কয়েকটি হলে শিক্ষার্থীদের থেকে বাধ্যতামূলক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ঊঠেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা এই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ।

 

RUতবে ইফতারের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে সকল প্রকার চাঁদা আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মিজানুর রহমান রানা।

 

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগের ইফতারে চাঁদা দিতে হবে। তাই সাধ্য না থাকলেও আমাদেরকে তাদের ইফতারে নির্ধারিত চাঁদা দিতে হচ্ছে।

 

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলে ইফতারের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। এই ইফতারকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে হলের শিক্ষার্থীদের থেকে বাধ্যতামূলক ৬০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে হলে অবস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ইফতারটির মূল আয়োজক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি রানা চৌধুরী।

 

এর আগে গত ৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে ইফতারের আয়োজন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ইফতারকে কেন্দ্র করে হলের প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে হলের ছাত্রলীগ কর্মী মিজান, সুজনসহ আরও অনেকে। একই ভাবে মাদার বখশ হলে আগামী ১৬ জুলাই আয়োজিত ছাত্রলীগের ইফতারকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ৫০টাকা করে চাঁদা আদায় করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই ইফতার অনুষ্ঠানের মূল আয়োজকের দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ওরফে ডিলস।

 

Post MIddle

একই ভাবে গত ১২ জুলাই শহীদ হবিবুর রহমান হলের ইফতারকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ।

 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সৈয়দ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো চাঁদা আদায় করা হয়নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

 

শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, তাদের থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হলেও সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনসহ অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী কোনো প্রকার চাঁদা না দিয়েই প্রতিটি ইফতারে অংশগ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের টাকায় ইফতার আয়োজন করে ছাত্রলীগ নিজেদের রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেন,  হলে ছাত্রলীগের ইফতার অনুষ্ঠানে সকল প্রকার চাঁদা নিতে নিষেধ করা হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে সাধারন শিক্ষার্থীদের অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। কিন্তু এরপরও যদি কোনো চাঁদা আদায় করে ইফতার আয়োজন করা হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হল প্রাধ্যক্ষ মো. শেরেজ্জামান বলেন, হলে ছাত্রলীগের ইফতার পার্টির কথা জানানো হলেও শিক্ষার্থীদের থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। যদি ছাত্রলীগের ইফতার অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের থেকে চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে তাহলে এটা ঠিক হয়নি বলেও জানান তিনি।

সঃ সুউ ফয়সাল

 

পছন্দের আরো পোস্ট