বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা এখন হুমকির মুখে

downloadউচ্চশিক্ষার আগ্রহকে পুঁজি করে একশ্রেণীর শিক্ষা বেনিয়াদের বানিজ্যিক দৃস্টিভঙ্গির কারনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফাঁদে  উচ্চশিক্ষা এখন হুমকির মুখে। । বর্তমানে কতিপয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা বানিজ্যের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রদানের বিপরীতে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। দুঃখজনক হল, এদের নানাভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর একশ্রেণীর অসাধু সদস্য, আইনজীবী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর বাইরে সুশীল সমাজের প্রভাবশালী প্রতিনিধি ও একাধিক রাজনীতিকও এর সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। মূলত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রতারণার ব্যবসাসহ অবৈধ বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাস যেমন বন্ধ হচ্ছে না, তেমনি অপরাধীরাও থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। দেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে এ নৈরাজ্য রোধ করতে হলে সরকারের কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই।
জানা গেছে, দেশে বর্তমানে চার ধরনের অবৈধ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- এক সময়ে সরকার অনুমোদিত কিন্তু বর্তমানে বন্ধ ঘোষিত, সরকার অনুমোদিত হলেও তার ক্যাম্পাস অবৈধ, অবৈধ আউটার ক্যাম্পাস এবং অবৈধ বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায় অভিভাবক ছাড়াই চলছে। অভিযোগ রয়েছে, ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা পড়াচ্ছেন, কী পড়ানো হচ্ছে, তার খোঁজ রাখে না কেউ। ফলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেই সনদ ব্যবসা এবং নামমাত্র শিক্ষার মাধ্যমে সনদ ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক নৈরাজ্য ও সনদ ব্যবসাসহ নানা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি সংসদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি তথ্য তলব করে। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি টিআইবি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে তারা বলেছে, ক্লাস না করিয়ে ও পরীক্ষা না নিয়ে এবং ব্যবহারিক ক্লাস না নিয়ে টাকার বিনিময়ে সনদ প্রদান করা হচ্ছে। তাদের গবেষণায়
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক মোট ৬০ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে।উচ্চশিক্ষার নামে অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে দুর্নীতি, অনিয়ম, ভর্তি ও সনদবাণিজ্য চলে এলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এসব দেখার কেউ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে মাঝে-মধ্যে দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্ক করে পত্র দেয়া হলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ফলে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা রকম অনিয়ম। মালিকানা দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে নামকাওয়াস্তে পাঠদান, কোচিং সেন্টারের আদলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, ভাড়ায় শিক্ষক এনে জোড়াতালি দিয়ে ক্যাম্পাস পরিচালনা, সনদ বিক্রি, ক্যাম্পাস ও শাখা বিক্রিসহ এমনসব কীর্তিকলাপ চলছে, যা এককথায় ভয়াবহ। সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটা নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার কথা বলা হলেও তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন সৃস্টি হবে।অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে প্রকৃত ও মানসম্পন্ন বেসরকারী বিম্ববিদ্যালয় গুলোর অবস্থান

পছন্দের আরো পোস্ট