ব্রিটেনে গভীর সঙ্কটে ৫০ হাজার বাংলাদেশী উচ্চশিক্ষার্থী

images (4)ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষা নিতে আসা প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এখন গভীর সঙ্কটে। এদের মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী বৃহত্তর সিলেটের অধিবাসী বলে জানা গেছে। স্টুডেন্ট কনসালটেন্সির নামে দেশের কিছু চক্রের খপ্পরে পড়ে এ শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগকেই হতে হয়েছে সর্বস্বান্ত। অন্যদিকে ব্রিটেনের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা বলে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিলেও ভর্তি করানো হয়েছে নামসর্বস্ব কিছু প্রতিষ্ঠানে। যার অধিকাংশই বিভিন্ন সময়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ অভিবাসন সংস্থার কঠোর নিয়মনীতির কারণে। ফলে দিন দিন বাড়ছে উচ্চশিক্ষা নিতে এসে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশী ছাত্রের সংখ্যা। অন্যদিকে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সময়ে হোম অফিস অনুমোদন দিলেও বন্ধ হয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউই। সিলেট অঞ্চল থেকে যাওয়া শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে তাদের জীবিকার সন্ধান করতে পারলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে যেসব শিক্ষার্থী পাড়ি জমিয়েছেন ব্রিটেনে তাদের অবস্থা করুণ। অনেকে বাধ্য হয়ে দেশে ফেরত আসছেন। সিলেটী শিক্ষার্থীরা সিলেটী অধ্যুষিত এলাকায় ছোটখাট চাকরি করে কোনো মতে বেঁচে আছেন। সম্প্রতি ব্রিটেনের সরকারি এক অনুসন্ধানে, বিদেশি স্টুডেন্টদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দেয়া ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টের প্রায় ৪৮ হাজার অবৈধ ও সন্দেহজনক সার্টিফিকেটের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হোম অফিস দেশের ৫৭টি কলেজ ও ৩টি ইউনিভার্সিটির লাইসেন্স বাতিল এবং স্থগিত করে দেয়। একই সঙ্গে হোম অফিস স্থগিত হওয়া ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। স্থগিত হওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হচ্ছেন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। ইমিগ্রেশন মিনিস্টার বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদনপ্রাপ্ত তালিকা থেকে এরই মধ্যে ৭৫০টি কলেজের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৪০০ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সরকার অবগত আছে, যারা ভুয়া সনদ সরবরাহকারী এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ব্রিটিশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তের খবরে হতাশা নেমে এসেছে ব্রিটেনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মাঝে। একদিকে যেমন বাংলাদেশে আর ব্রিটেনে গড়ে ওঠা কিছু স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, তেমনি নানা অজুহাতে ব্রিটেনের শিক্ষাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ স্থায়ী বা সাময়িকভাবে বন্ধ করছে বিভিন্ন সময় তাদেরই অনুমোদন দেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ফলে শিক্ষার্থীরা যেমন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর্থিক ও মানসিকভাবে, তেমনি হয়ে পড়ছে অবৈধ অভিবাসী। আর এভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন।

পছন্দের আরো পোস্ট