জন্মসনদে ভুল, অনিশ্চিত শিক্ষাজীবন

জন্মনিবন্ধন সনদে বয়স বেশি থাকায় ভৈরবের কয়েক শত শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সন্তানের শিক্ষাজীবন সমাপ্তির আশংকায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। বিপাকে পড়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জন্মনিবন্ধন সনদ সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।Bhairab

দেশে প্রচলিত শিক্ষা বিধান অনুযায়ী, ৬-৮ বছরের শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি; ১১ বছরের মধ্যে প্রাথমিক সমাপনী এবং ১৭ বছরের মধ্যে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ভৈরবের অধিকাংশ শিশুর জন্মসনদে ভুল থাকায় অনেকেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না বলে জানা গেছে।

বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের শেষে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ বছর।

কিন্তু জন্মসনদ অনুযায়ী বয়স বেশি হওয়ায় ভৈরবের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

অভিভাবকেরা জানান, জন্মসনদ অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বয়স ১৬-১৯ বছর। প্রকৃতপক্ষে তাদের বয়স আরও কম। এটি সংশোধনের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন। নতুবা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত বলে জানানো হয়েছে।

তবে, জন্মসনদ নিয়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে ভিন্ন মত দেখা গেছে। যোগেন্দ্র চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসলাম উদ্দিনের অভিমত, ছেলে সন্তানদের অল্প বয়সে দেশের বাইরে পাঠাতে এবং মেয়ে শিশুকে বিয়ে দিতে গ্রামের অভিভাবকরা সচেতনভাবেই জন্ম সনদে বয়স বৃদ্ধি করে নিবন্ধন করিয়েছেন।

Post MIddle

ব্র্যাক পরিচালিত উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক স্বপ্না আক্তারের মতে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্মনিবন্ধন করার সময় অশিক্ষিক-অসচেতন অভিভাবকরা আনুমানিক শিশুদের বয়স লিপিবদ্ধ করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

ভৈরব আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল মিয়াও অভিভাবকদের অসচেতনতাকেই দায়ী করেছেন। তবে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এই এ সমস্যার সমাধানের কথা বললেন।

আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া জানান, জন্মনিবন্ধন সনদে বয়স বেশি-এমন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা এসে বয়স কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু অনলাইন সিস্টেমে জন্মনিবন্ধন সনদ লিপিবদ্ধ হয়। তাই এটি দ্রুত সমাধান করা সম্ভব নয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অমিতাভ দেবনাথ বলেন, প্রধানত অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে কিছু কিছু অভিভাবক সচেতনভাবেই এটি করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন জানান, ১১ বছরে প্রাথমিক সমাপনী এবং ১৭ বছরের মধ্যে জেএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শতভাগ শিক্ষা নিশ্চিত করতেই এটি করা হয়।

স: ইএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট