২০১৫-১৬ সেশনে নোয়াখালী মডেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু
আগামি ২০১৫-১৬ সেশনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর প্রয়াসে নোয়াখালী মডেল কলেজের নির্মাণ কাজ চলছে।
উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে নোয়াখালী সদরের উপকূলীয় অঞ্চল আণ্ডারচর ইউনিয়নের মাইজচরায় স্থানীয়দের উদ্যোগে ‘নোয়াখালী মডেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে এলাকার শত-শত শিক্ষার্থী এসএসসির পর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আণ্ডারচর ইউনিয়নের আশ-পাশে কোনো উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান (কলেজ) না থাকায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি/দাখিল পাশ করার পর ঝরে পড়ে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় শতভাগ। আণ্ডারচরের ৮কি.মি. উত্তরে, আবার পূর্বে প্রায় ৯ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো কলেজ না থাকায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য হয়েই পড়া-শোনা শেষ করতে হয়। এই ইউনিয়নের দক্ষিণে ৩০কি.মি. আর পশ্চিমে ২৫ কিলোমিটারের ভেতরেও কোনো কলেজ নেই।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোস্তাফা হায়দার মাহমুদ জানান, ‘অবহেলিত উপকূলীয়দের কথা চিন্তা করেই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করছি। আমি মনে করি, এর ফলে এই অঞ্চলের শতভাগ শিক্ষার্থী তাদের ছাত্রজীবন চালিয়ে যেতে পারবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘কলেজটি প্রতিষ্ঠায় এলাকার অনেকেই আমাদের সহায়তা করেছে। আমি আশা করি, এটি পূর্ণাঙ্গ রূপ নেওয়া পর্যন্ত তারা আমাদের সহায়তা করবেন’।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের স্বস্তি এসেছে এখন আর আমাদের সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ হবে না। তারা এসএসসির পরও পাড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।
কেউ কেউ বলছেন, কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমরা এর সফলতা কামনা করি। অনেক অর্থ ব্যয় করে আমাদের সন্তাদের শহরে পাঠাতে হবে না। এখন তারা বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।
শান্তির হাট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ জানান, এই স্কুল থেকে গত তিন বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করা অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা বন্ধ হয়েছে। কয়েকজন ছাত্র শহরে গিয়ে লেখাপড়া করলেও ছাত্রীরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
তিনি বলেন, এর একমাত্র কারণ পাশবর্তী এলাকায় কোনো কলেজ না থাকা। আশা করছি, নোয়াখালী মডেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ায় আগামিতে আর কোনো ছাত্র-ছাত্রীকে পড়ালেখা ছাড়তে হবে না।
আনোয়ার হোসেন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাসান মাহমুদ জানান, তার স্কুল থেকে এবার পাশ করেছে ৬৫ জন ছাত্রছাত্রী। এর মধ্যে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৩৫ জনের মতো বাকিরা ছাত্রজীবন শেষ করে দিয়েছে। ঝরে পড়াদের মধ্যে বেশির ভাগ ছাত্রী। দূরত্বের কারণে বাধ্য হয়ে এসব ছাত্রীর পড়াশোনা শেষ করতে হচ্ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামি ২০১৫ সালের মধ্যে নোয়াখালী মডেল কলেজ চালু হবে। কলেজটি চালু হলে এই অবহেলিত এলাকার সকল শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। কলেজটি আমাদের এলাকার সমৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
স: ইএইচ